[email protected] শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২

পরিবেশ রক্ষায় সুইডেনের বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করছে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৭:০৭ পিএম

সংগৃহীত

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে নতুন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এই প্রকল্পে সুইডেন সরকার তাদের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডার মাধ্যমে অর্থায়ন করছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর পরিবেশ অধিদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে প্রকল্পটির অনুদান চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের হাতে।

চুক্তি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রকল্পটি বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশগত ঝুঁকি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। প্রকল্পের আওতায় নেয়া হবে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম। এর মধ্যে আছে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাগুলোর উন্নত তদারকি, পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম এবং দেশের প্রথম ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরো বলেন, পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ ধরনের আন্তর্জাতিক সহায়তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা টেকসই ভবিষ্যতের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছি।

এর আগে, অনুদান চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে। সেখান থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) ড. এ. কে. এম. শাহাবুদ্দিন ও ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও সহযোগিতা প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লুবনা ইয়াসমিন ও সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতা বিভাগের উপ-প্রধান ও ফার্স্ট সেক্রেটারি নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম। সিডার সহায়তায় ৫০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার ব্যয়ে পরিচালিত এই প্রকল্পটি তিনটি মূল উপাদানের ওপর ভিত্তি করে বাস্তবায়ন হবে।

প্রথমত- প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি। এর আওতায় জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তৈরি করা হবে নজরদারি পরিকল্পনা, দেয়া হবে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ, এবং বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ করা হবে।

দ্বিতীয়ত- সংকটাপন্ন ও সংরক্ষিত এলাকার পুনরুদ্ধার কার্যক্রম। বিশেষ করে সোনাদিয়া দ্বীপসহ ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়াগুলোতে তদারকি জোরদার করা হবে। শুরু হবে ম্যানগ্রোভ বন পুনঃস্থাপন, বালিয়াড়ি স্থিতিশীলকরণ, কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র গঠন এবং প্রাথমিক পরিবেশগত মূল্যায়ন। এসব কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গঠন করা হবে ভিলেজ কনজারভেশন গ্রুপ, যারা স্থানীয়ভাবে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করবে।

তৃতীয়ত- প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন। একটি বিস্তৃত স্কোপিং স্টাডি ও অংশীজন পরামর্শের ভিত্তিতে গঠিত এই ফান্ড বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণ এবং মানব-প্রাণী দ্বন্দ্ব হ্রাসে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে সরকারের বাজেট নির্ভরতা কমিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণে একটি টেকসই অর্থায়ন কাঠামো তৈরি হবে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী।

সোর্স: আমার দেশ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর