পুলিশের আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে। তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই। কোথাও মিছিল করার চেষ্টা করলে অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠনের মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে অতীত কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে। অপছন্দ করার কারণে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়নি।
আজ শনিবার বেলা ৩টার দিকে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটরিয়াম রংপুর মহানগর পুলিশের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর বৈধ কেউ অস্ত্র পায় নাই। অস্ত্র যার পাওয়ার কথা না, সেই ফ্যাসিস্ট শক্তি অস্ত্র পেয়েছে। বৈধভাবে অস্ত্র নিয়েছে এবং সেটা অবৈধভাবে ব্যবহার করেছে। সে অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে আমাদের নিরীহ জনগণের ওপর।’
নতুন করে অস্ত্র নীতিমালা করা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, যাদেরকে বৈধ অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল, তাদের তালিকা করা হয়েছে। অধিকাংশ বৈধ অস্ত্র সরকারে জিম্মায় দিয়েছি। নতুন করে অস্ত্র নীতিমালা করা হচ্ছে। যাতে করে সরকারি অস্ত্র, বৈধ অস্ত্র কেউ ব্যবহার করতে না পারে।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ বিষয়ে আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, একটা বেআইনি চর্চা শুরু হয়েছিল। যেখানে ছাত্রলীগ ইউনিভার্সিটি পর্যায়ে থাকবে। ওখানে ছাত্রলীগ হিসেবে মাস্তানি করবে, সব ধরনের অপকর্ম অন্যায় করবে। হল দখল থেকে চাঁদাবাজি করবে। আবার একটা পর্যায়ে ওরাই বিসিএস দিবে, ওরাই আবার বিভিন্ন প্রশাসনে পুলিশে আসবে। ক্যাডার হিসেবে কাজ করবে। তাঁর ক্ষমতা অনেক। একদিকে রাজনীতি, অন্যদিকে পুলিশ, প্রশাসনের ক্ষমতা। এই চর্চা, এই ব্যবস্থাপনা সংস্কার না হলে ভালো প্রশাসন পাওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ হয়েছে। তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই। কোথাও মিছিল করার চেষ্টা করলে অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠনের মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে অতীত কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে। অপছন্দ করার কারণে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়নি।
আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের জড়িত পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি উল্লেখ্য করে আইজিপি বলেন, ‘২১ জন পুলিশ কর্মকর্তা, সদস্য বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে। তাঁরা সত্যিকার অর্থে বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত। তাদের ছাড় দেওয়া হয় নাই। তবে প্রত্যেকেই সবকিছুতে জড়িত এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। প্রকৃত অপরাধী যারা আছে, তাদেরকে আমরা আইনের আওতায় আনব।’
ছাত্র-জনতা হত্যা, হামলার মামলা নিয়ে আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘যে সমস্ত ছাত্র জনতা এ আন্দোলনে নিহত হয়েছে। সেই মামলাগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আবু সাঈদের ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ মামলার তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে এই মামলায় দুজন পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশে এ ধরনের যত মামলা আছে, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা শুধু একাই নয়; পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের স্পেশাল টিম তদারকি করছি। এই মামলাগুলি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে যাবে। সব মিলে মামলাগুলোর যেন ভালো তদন্ত হয়, প্রকৃত অপরাধীরা তারা সাজা পায় সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করছি।’
এর আগে সকালে পুলিশের আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের গ্রামের বাড়ি পীরগঞ্জের বাবনপুর সাফরপাড়া যান। সেখানে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ার শেষে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করেন।
মন্তব্য করুন: