পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অন্তত ১১ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় আজ বুধবার গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই আত্মঘাতী হামলাকারী তার নিজের বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটায়।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানের অশান্ত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুর একটি নিরাপত্তা চৌকিতে এই বিস্ফোরণ ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার মধ্যে একটি এটি।
পাকিস্তানি তালেবানের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ ‘হাফিজ গুল বাহাদুর গ্রুপ’ একটি বিবৃতিতে এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
তবে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, নিরাপত্তা কর্মীরা এই হামলার পরিকল্পনাকারীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান চালাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সহিংসতার বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানি তালেবান তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামেও পরিচিত।
এটি একটি পৃথক গোষ্ঠী কিন্তু তারা আফগানিস্তান তালেবানের মিত্র, যারা ২০২১ সালে আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিসহ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে একটি বড় সামরিক অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন। প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় একটি ট্রেন স্টেশনে গত ৯ নভেম্বর আত্মঘাতী হামলার পর এই আদেশ দিয়েছিলেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানেও সহিংসতা বেড়েছে, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই টিটিপি এবং গুল বাহাদুর গ্রুপকে লক্ষ্য করে অভিযান চালায়।
একজন সিনিয়র প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক এবং ইসলামাবাদ-ভিত্তিক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ খান বলেছেন, ২০২২ সাল থেকে পাকিস্তানে ‘জঙ্গি’ হামলায় ৯০০ জনের বেশি নিরাপত্তা বাহিনী নিহত হয়েছে।
খান বলেন, ‘টিটিপি এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলো তাদের কার্যক্রম বাড়িয়েছে। তারা আরো জনবল নিয়োগ, অর্থ এবং অস্ত্র পাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বিদ্রোহীদের পরাজিত করতে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।’
পাকিস্তান ২০২২ সাল থেকে রাজনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে, যখন সংসদে অনাস্থা ভোটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। ২০২৩ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং কারাগারে বন্দি রাখা হয়। তারপর থেকে, তার সমর্থকরা তার মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করছে।
মন্তব্য করুন: