ajbarta24@gmail.com শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
৬ বৈশাখ ১৪৩২

৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন : তারেক রহমান

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ২২:১১ পিএম

সংগৃহীত ছবি

৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন,  ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহি-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুণরুজ্জীবনের অভূতপূর্ব অঙ্গীকার নিয়ে।

৬ নভেম্বর, বুধবার বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বার্তায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি এ বার্তা দেন।

এ অবস্থায় ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতাত্তোর রাষ্ট্রীয় অনাচার, রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহল নিজ স্বার্থে জাতীয় স্বাধীনতাকে বিপন্ন ও সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করে আধিপত্যবাদের থাবার মধ্যে দেশকে ঠেলে দেয়। শুধুমাত্র নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই গণতন্ত্রবিনাশী কর্মকাণ্ড শুরু করে। সেইজন্য মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যার মাধ্যমে একদলীয় বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়।

সে সময়ের দমন ও নিপীড়নের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাকশাল নির্মম একদলীয় দুঃশাসন কায়েশ করে। দেশে নেমে আসে অশান্তি ও হতাশার কালো ছায়া। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত অধিকারগুলোকে হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালে ৭৫ এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করে। এই অরাজক পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর স্বজাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির সম্মিলন ঘটে এবং জিয়াউর রহমান মুক্ত হন।

এসময় ছাত্র-জনতার মহান আত্মদানে ৫ আগস্টের পর দেশে গণতন্ত্রের পথচলা অবারিত হয়েছে উল্লেখ করে ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

৭ নভেম্বরের পটপরিবর্তনে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ সুগম হয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী স্বত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। আধিপত্যবাদী শক্তির এদেশীয় অনুচররা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নির্মমভাবে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনও ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।

দেশের গণতন্ত্র হত্যায় আওয়ামী লীগকে দায়ী করে তারেক রহমান বলেন, বিদেশি শক্তির দোসর আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা প্রায় ১৬ বছর রাষ্ট্রক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়ে ছিল। এদের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়ে। গোপন চুক্তি সম্পাদন করে আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভূত্ব কায়েমের বেপরোয়া কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছিল। তারা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতা-কর্মীদেরকে বিভৎস নির্মমতায় দমন করেছে, আয়নাঘরসহ গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার এক ভয়াল দুঃশাসন কায়েম করে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে নির্দয় শাসনের যাঁতাকলে পৈশাচিকভাবে পিষ্ট করেছে। আর নির্যাতনের এই অব্যাহত ধারায় ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বহু বছর মুক্তি দেয়া হয়নি।

ছাত্র-জনতার হাত ধরে দেশে গণতন্ত্র চর্চার পথ সুগম হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট আবারও ছাত্র-জনতার মহিমান্বিত আত্মদানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টরা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। মানুষের মধ্যে গণতন্ত্রের মুক্তির পথ প্রসারিত হয়েছে। এখন চূড়ান্ত গণতন্ত্রের চর্চার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনসহ গণতন্ত্রের অপরিহার্য শর্ত মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের নতজানু নীতির কারণেই আমাদের আবহমানকালের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর চলেছিল বাধাহীন আগ্রাসন। তাই আমি মনে করি ৭ নভেম্বরের চেতনায় সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পথচলাকে অবারিত এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি।

সর্বশেষ তিনি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর