[email protected] শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তিনজন ভবঘুরে সাম্যকে কেন হত্যা করবে? প্রশ্ন রিজভীর

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৫ ১৮:০৫ পিএম

ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের প্রকাশনা ও প্রচার সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ৫ আগস্টের পর এক পরিবর্তিত পরিস্থিতি। আমরা সবাই একটু স্বস্তিতে থাকতে চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষক ছাত্ররা নির্বিঘ্নে ক্লাসে যাবে, ক্লাস থেকে বের হবে। এখন কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অরাজক পরিস্থিতি, তরুণ ছাত্রের লাশ ক্যাম্পাসের মধ্যে চলছে, রক্ত ঝরছে। এখন তো আর আওয়ামী দোসররা নেই। এখন যারা ক্ষমতায় আছেন, সকল বিরোধী দলীয় যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তারা সমর্থন করেছেন। তাহলে এখন কেন লাশ পড়বে? গত পরশুদিন রাত ১২ টার সময় ছাত্রদল নেতা সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। কি অন্যায় করেছিল সাম্য! আমার তো মনে হয় এখানে রাজনৈতিক কারণ আছে। তিনজন ভবঘুরে সাম্যকে কেন হত্যা করবে? কয়েকদিন আগে সে ফেইসবুকে শাহবাগে জাতীয় সংগীত বন্ধের জন্য একটা আন্দোলন চলছিল। তার বিরুদ্ধে এবং জাতীয় সংগীতের পক্ষে একটা পোস্ট করেছে। এটাই কি সেই কারণ।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদী আমলে পার্শ্ববর্তী দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আবরারকে হত্যা করা হয়। আজকে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, ৭১ এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললে তার জীবন চলে যায়। অর্থাৎ দেশের পক্ষে, যারা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, যারা জাতীয় সংগীতের পক্ষে তাদের জীবন চলে যায়। আমি এজন্যই বলেছি, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে।

পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, আপনারা ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখুন। ভবঘুরেদেরকে গ্রেফতার করেছেন, মানুষ এসব বিষয় সহজভাবে নেয় না। মানুষ সহজভাবে নিতো যদি, সবসময় সত্য এবং ন্যায় অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতো। কিন্তু সেটা তারা নেয়নি। যেমন আবরার হত্যাকাণ্ডে নেননি, তেমনি আরও ঘটনাও নেননি। আজকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাসিনা নেই, দোসররা নেই, রক্তপাত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে তফাজ্জল নামে একজনকেও হত্যা করা হয়েছে। ক্যাম্পাস হবে শান্তি, এখানে থাকবে শান্তির পতাকা। সেখানে কেন রক্তপাত হবে। এটা তো হওয়ার কথা নয়।

কালকে ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে গিয়েছে ছাত্র দলের নেতারা। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মারা গেছে। আপনি বিরক্ত হয়েছেন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন, আপনি তুইতোকারি করেছেন ছাত্র নেতাদেরকে। আপনি শুনতে চান না। কারণ, সাম্য ছাত্রদল করে। আপনার রাজনৈতিক চিন্তা দর্শন কি সেটা আমরা ইতিমধ্যে জেনে ফেলেছি। যারা জাতীয়তাবাদের পক্ষে ওখানে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে ছাত্র সংগঠন করে সেটা আপনি পছন্দ করেন না। আপনার উচিত ছিল প্রথমে সেই লাশ দেখা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। ভাইস চ্যান্সেলররা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিশেষ দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে নেমে যান, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই শান্তি বয়ে আনবে না।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন, ছাত্রদলের সহ সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ।

সোর্স: আমার দেশ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর