বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘উড়াল সেতু, মেগা প্রজেক্ট কি চিবিয়ে চিবিয়ে খাবো নাকি, যে দেশের হিউম্যান (মানব সম্পদ) উন্নতি হয় না, সে দেশ কখনো সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে দেশের উন্নয়ন করা যেত। করোনার সময় স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম করেছে, যার নায়ক দরবেশ এখন জেলে আছেন।’
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। কোন ঘটনায় আবেগ বশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না। শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত ও ওয়েলফেয়ার খাতে উদ্যোগ নিন।'
রিজভী বলেন, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন মহীয়সী নারী ছিলেন। একজন ধনী পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি সমাজের কল্যাণে কাজে নেমে আসেন। তিনি মানুষের সেবার জন্য নার্সিং পেশা চালু করেন। তিনি শত্রু মিত্র সবার সেবা করেছেন।
তিনি বলেন, আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে সেটি রাজনৈতিক কারণে, সেখানে নার্সিং এর যে মহিমান্বিত রূপ যা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার ভাষা আমি প্রকাশ করতে পারব না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা, মায়ের সেবা। একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নার্সকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো হয়। শুধু আমাদের দেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে এ অবস্থা। এমনকি নার্সদের আবাসন সুবিধা নেই। তাদের কাজের কারণে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়, কিন্তু ক্যাম্পাসে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজের বেতন থেকে বাসা ভাড়া দিতে হয়। আমাদের যেমন ভালো ডাক্তার দরকার, তেমনি নার্সদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটি দিতে হবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জানি না এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাত কীভাবে দেখবে, অথচ অত্যন্ত জরুরি এই সার্ভিসটা। কেন আমি ডলার খরচ করে ইন্ডিয়াতে যাবো? কেন তাদেরকে টাকা দিয়ে আসবো? তারা প্রতিমুহূর্তে আমাদেরকে নিয়ে নেগেটিভ বয়ান তৈরি করে অপপ্রচার করছে। তাদের পিছনে যদি এই আমরা ডলার খরচ না করে, এই টাকা গুলো যদি আমাদের নার্স-ডাক্তারদের পিছনে খরচ করি, তাহলে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার তো কোনো কারণই থাকতে পারে না। ডাক্তারদের লজিস্টিক সাপোর্ট ঠিক করতে পারলেই তো কেউ ওই (ভারতের) দিকে যেতো না। সেই কাজগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে করা দরকার ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। কোনো ঘটনায় আবেগ বশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না। শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত ও ওয়েলফেয়ার খাতে উদ্যোগ নিন।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কাদের গণি চৌধুরী, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সহ সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।
সোর্স: আমার দেশ
মন্তব্য করুন: