আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের খামারগুলোতে কোরবানির পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারিরা। এবারের কোরবানির জন্য লক্ষ্মীপুরে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় খামারে প্রস্তুত করা এসব পশু কুরবানির চাহিদা মিটিয়েও প্রায় ৫০ হাজার উদ্বৃত্ত থাকবে।
তবে খাবারের মূল্য ও লালনপালন খরচ বেশি হওয়ায় দাম আগের চেয়ে চড়া থাকার সম্ভবনা রয়েছে। অন্যদিকে খামারিরা চান দেশীয় চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে যেন গরু না আসে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, কোরবানির জন্য জেলায় পশুর চাহিদা ৮৮ হাজার ২১৫টি হলেও এবার লালনপালন করা হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৩টি পশু, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার বেশি। জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ২৭’শ ছোট-বড় খামারে চলছে কোরবানির পশুর পরিচর্যা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বালাশপুর গ্রামে আদর্শ গরুর খামারে গিয়ে দেখা যায় ছোট-বড় শতাধিক গরু। যা পরিচর্যায় কাজ করছেন ১০জন শ্রমিক।
খামারটির মালিক মো. ফারুকুর রহমান জানান, তার খামারে দেশীয় জাতের শতাধিক গরু রয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে এসব গরু লালনপালন করা হচ্ছে। শুধু এই খামারেই নয়, জেলার অন্যান্য খামারেও চলছে অতিরিক্ত যত্ন, পরিচর্যা ও পশু চিকিৎসার ব্যবস্থা।
তবে খামারিরা বলছেন, গেল বছরের তুলনায় গোখাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত পশু থাকায় গরুর সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। গরুগুলোকে পুষ্টিকর খাবার যেমন খৈল, ভুসি, ছোলা, সবুজ ঘাস ও গম খাওয়ানো হচ্ছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজা করা হচ্ছে, কোনো হরমোন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করা হচ্ছে না।
ক্রেতারা বলছেন, গরুর বাজারে গত বছরের তুলনায় প্রতি পশুতে ১৫-২০ হাজার টাকা বেশি দাম গুনতে হচ্ছে। অনেকেই ইতিমধ্যে গরু কিনলেও বেশির ভাগ ক্রেতা ঈদের ক’দিন আগেই বাজারে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে জেলার মজুত অনুযায়ী পশুর কোনো ঘাটতি না থাকলেও সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু ঢুকলে দেশীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সতর্ক করেছেন তারা। এ বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমুদ রঞ্জন মিত্র জানান, খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। জেলার চাহিদার তুলনায় পশু বেশি থাকায় ঈদে ঘাটতির কোনো আশঙ্কা নেই। পাশাপাশি ভারত থেকে গরু আসা ঠেকাতে কড়া নজরদারিতে রয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। কোরবানির সময় প্রতিটি হাটে পশু চিকিৎসক মোতায়েন থাকবে বলেও জানান তিনি।
সোর্স: আমার দেশ
মন্তব্য করুন: