[email protected] সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
২৫ কার্তিক ১৪৩২

শেখ হাসিনার পতনে নেতৃত্ব দেওয়াদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা, যেন তীরে এসে তরী ডুবে যাচ্ছে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ২১:১১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট—বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। শিক্ষার্থীদের “রাজাকার” বলে অভিহিত করা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় দমননীতি, সবকিছুই যেন প্রস্তুতি নিচ্ছিল এই পতনের।

মুক্তির উল্লাসে সেদিন রাস্তায় নামে হাজারো মানুষ। তাদেরই একজন মীর আহমদ বিন কাসেম, যিনি আট বছর গোপন বন্দিশালায় আটক ছিলেন আগের সরকারের আমলে। মুক্তির পর তিনি ও তার মতো অসংখ্য তরুণ নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে বিভোর হন।

তাদের সেই স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনুস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে তিনি শুরু করেন পুনর্গঠনের চেষ্টা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় হতাশা। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি ব্যর্থ হতে যাচ্ছে জেনারেশন z এর সেই বিপ্লব?

অন্যদিকে চলছে শেখ হাসিনার বিচারের নাটকীয় অধ্যায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা, মৃত্যুদণ্ডের দাবি, সবই যেন ইতিহাসের কঠোর পুনরাবৃত্তি। হাসিনা একে বলছেন “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” ও “ক্যাঙ্গারু কোর্টের নাটক।”

এদিকে রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন ভারসাম্য খুঁজছে বাংলাদেশ। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, পুনরুত্থান-প্রত্যাশী বিএনপি, আর ছাত্রনেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি, সবাই নিজেদের অবস্থান খুঁজছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় ঐক্যের যে বিরল মুহূর্ত একদা সৃষ্টি হয়েছিল, তা আজ বিভাজনের শিকার।

আগামী নির্বাচনের আগে দেশ এখন এক অনিশ্চিত মোড়ে দাঁড়িয়ে। একদিকে চীনের অর্থনৈতিক চাপ, অন্যদিকে ভারতের প্রভাব ও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কবৃদ্ধির ধাক্কা, এই ত্রিমুখী বাস্তবতার মধ্যে ইউনুস সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ একটাই: গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটানো।

শেষ পর্যন্ত ইতিহাসই নির্ধারণ করবে, এই অধ্যায় হবে কি এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা, নাকি আরেকটি অসমাপ্ত বিপ্লবের করুণ সমাপ্তি।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর