ajbarta24@gmail.com শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫
২৮ পৌষ ১৪৩১

খোলেনি সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের দ্বার , অবৈধ আয়ে ঝুঁকে পড়ার শঙ্কা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ২০:১০ পিএম

সংগৃহীত ছবি

পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াতের দ্বার খোলেনি এখনও। মধ্য অক্টোবরেও টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু না হওয়ায় দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না পর্যটকরা। দ্বীপে পর্যটক যাওয়ার সুযোগ বন্ধ থাকায় পর্যটন জৌলুস হারাতে বসছে নারকেল জিঞ্জিরা খ্যাত সেন্টমার্টিন। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ে জড়িত বিনিয়োগকারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিকসহ লক্ষাধিক ম

পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াতের দ্বার খোলেনি এখনও। মধ্য অক্টোবরেও টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু না হওয়ায় দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না পর্যটকরা। দ্বীপে পর্যটক যাওয়ার সুযোগ বন্ধ থাকায় পর্যটন জৌলুস হারাতে বসছে নারকেল জিঞ্জিরা খ্যাত সেন্টমার্টিন। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ে জড়িত বিনিয়োগকারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শ্রমিকসহ লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

দ্বীপবাসীর দাবি, অতি দ্রুত টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের সুযোগ করে দিয়ে দ্বীপে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হোক।

সেন্টমার্টিনে পর্যটনের দ্বার খুলতে দ্বীপবাসীর দাবির সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। দ্বীপে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি মানুষের আয়-রোজগারের বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। গত সোমবার বিকালে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এতে তারা ‘পরিবেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ স্লোগান দেন।

সেন্টমার্টিনে পর্যটন মৌসুমের শুরুতে পর্যটক যাতায়াতের সুযোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে পর্যটন খাত বন্ধ হয়ে গেলে বেকারত্বের হার বাড়বে। এতে পর্যটনসংশ্লিষ্ট দেড় লাখ মানুষের জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এ ছাড়া বৈধপথ বন্ধ হয়ে গেলে সীমান্তের বাসিন্দারা বেকারত্বে পাশাপাশি অবৈধ আয়ের দিকে ঝুঁকবে। তাই প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের অনুরোধ পর্যটকসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশার মানুষের কথা চিন্তা করে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল চালুর পাশাপাশি দ্বীপে রাত্রিযাপন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।’

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সীমান্তের মানুষের বৈধ ব্যবসায়ের সুযোগ দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। বৈধ উপায়ে একের পর এক আয়ের সুযোগ বন্ধ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এখন পর্যটন ব্যবসাতেও ধস নামলে মানুষের আয়-রোজগারের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে একদিকে বেকারত্বে সংখ্যা বাড়বে, পাশাপাশি উপায়ন্তর না পেলে অনেকেই অবৈধভাবে রোজগারের সুযোগ খুঁজবে। সেন্টমার্টিন পর্যটন ব্যবসায়ের সঙ্গে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। তাই দ্বীপে পর্যটকদের রাতযাপন বন্ধসহ বিভিন্ন ধরনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে তারা কর্মহীন হয়ে পড়বে।’

পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারী সিন্দবাদের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন খাতে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এমনিতেই গত কয়েক বছর ধরে সেন্টমার্টিনে পর্যটন ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের পর্যটন খাত আলোর মুখ দেখবে না। তাই দেশের পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে হলে সরকারকে পর্যটন ব্যবসায়ীদের পাশে থাকতে হবে। তাই অবিলম্বে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করে পর্যটকদের অনায়াসে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া দরকার।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল চালুসহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া-সংবলিত একটি স্মারকলিপি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দিয়েছেন। আমি সেই স্মারকলিপি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নির্দেশনা মতে কার্যক্রম শুরু করবো।’

সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাধারণ মানুষের দাবি, দ্বীপের মানুষের আয়ের একমাত্র উৎস পর্যটন খাত। এ ছাড়া তাদের জীবন-জীবিকার বিকল্প কোনও সুযোগ নেই। পর্যটন খাত বন্ধ হলে কিংবা এখাতে ধস নামলে অর্থনৈতিকভাবে চরম ক্ষতির মুখে পড়বে দ্বীপবাসী। পরিবেশ রক্ষায় সরকারের দাবির সঙ্গে তারা একমত পোষণ করলেও পর্যটন খাত চাঙা রেখে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন তারা।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর