ajbarta24@gmail.com শনিবার, ৪ জানুয়ারি ২০২৫
২১ পৌষ ১৪৩১

ডিসেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:০১ পিএম

গ্রাফিক্স

সদ্য বিদায়ী ডিসেম্বর মাসে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ২.৬৪ বিলিয়ন ডলার বা ২৬৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে, যা একক মাস হিসেবে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এর আগে কখনোই এত পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ৩১ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাই ২.৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলো ২০২৪ সালের

এ ছাড়া ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার (২৬.৮৯ বিলিয়ন) সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। এর আগে এত বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স কোনো বছরে আসেনি অর্থাৎ বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি এক বছরের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে, যা বছরের শেষ মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এসময় প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এর ফলে ২০২৪ সালের সার্বিক পুরো বছরে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অন্যতম উপাদান হলো- রপ্তানি আয় ও বিদেশি ঋণ। ফলে রেমিট্যান্স বাড়লে দেশে রিজার্ভ বাড়ে। অর্থনীতি শক্তিশালী হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বরে) ১ হাজার ৩৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৯৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৮০ কোটি ডলার।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ বছরে প্রবাসী আয় তার আগের বছরের (২০২৩ সালের ) চেয়ে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার বা ২০.৫০ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালের ১২ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৯২ কোটি (২১.৯২ বিলিয়ন) ডলার।

কোন মাসে কত রেমিট্যান্স এলো:
২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ২১১ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি-২১৬ কোটি ডলার, মার্চে ১৯৮ কোটি, এপ্রিলে ২০৪ কোটি, মে ২২৫ কোটি, জুন মাসে ২৫৩ কোটি, জুলাইয়ে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি, অক্টোবরে ২৪০ কোটি নভেম্বরে ২২০ কোটি এবং সবশেষ ডিসেম্বর মাসে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স।

বছরভিত্তিক রেমিট্যান্স:
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার, ২০২৩ সালে এসেছিল ২ হাজার ১৯২ কোটি ডলার, ২০২২ সালে আসে ২ হাজার ১২৯ কোটি, ২০২১ সালে ছিল ২ হাজার ২০৭ কোটি ডলার। ২০২০ সালে রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ১৭৪ কোটি ডলার। ২০১৯ সালে আসে ১ হাজার ৮৩৩ কোটি ডলার। এর আগে ২০১৮ সালে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ডলার। ২০১৭ সালে এসেছিল ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এর আগের বছর ২০১৬ সালে ছিল ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার। ২০১৫ সালে এসেছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার। আর ২০১৪ সালে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার।

বাড়ছে রিজার্ভ:
রেমিট্যান্স প্রবাহের ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুত বা রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬১০ কোটি ডলার (২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব)। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ১৩৪ কোটি ডলার। দীর্ঘদিন পর বিপিএম৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

সূত্র: মানবজমিন

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর