[email protected] শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ভারত–আফগানিস্তানকে সরাসরি যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ পাকিস্তানের

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:১১ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

চলতি সপ্তাহে আবারও অস্থিরতার ঘন ছায়া নেমে এসেছে পাকিস্তানে। কয়েক দিনের ব্যবধানে সংঘটিত দুটি আত্মঘাতী হামলা দেশটির ভেতর নতুন করে অনিশ্চয়তা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে রাজধানী ইসলামাবাদের এক নিম্ন আদালতে।

সকালের শুনানির মাঝেই আচমকা প্রবল শব্দ। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নিরাপত্তা চৌকি অতিক্রম করার পরপরই এক ব্যক্তি নিজেকে উড়িয়ে দেয়। মুহূর্তেই আদালত চত্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। দ্রুত ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী এবং শুরু হয় তদন্ত।

এর কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই আরেকটি বড় হামলার খবর আসে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের একটি ক্যাডেট কলেজ থেকে। প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক আত্মঘাতী জঙ্গি বিকট বিস্ফোরণ ঘটায়। প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এবং নিরাপত্তা কর্মীদের লক্ষ্য করেই এ হামলা হয়েছে বলে ধারণা তদন্ত কর্মকর্তাদের। পাহাড়ি অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ বহু দূর পর্যন্ত শোনা যায়, আর পুরো প্রশিক্ষণ ক্যাম্প মুহূর্তেই পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। পরে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এই হামলার দায় স্বীকার করে। তারা জানায়—যাদের তারা “অনইসলামিক বিচার ও প্রশাসনিক কাঠামো” বলে মনে করে, তাদেরই টার্গেট করা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা নতুন হামলার হুশিয়ারিও দেয়।

এ দুটি হামলার পর পাকিস্তানের রাজনীতি তীব্র উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। হামলার উৎস, পরিকল্পনাকারী এবং সম্ভাব্য মদদদাতাদের নিয়ে শুরু হয় জোরালো বিতর্ক। এই পরিস্থিতিতে প্রকাশ্যে আসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেন, “পূর্বে ভারত, পশ্চিমে আফগানিস্তান—দুই ফ্রন্টেই লড়াইয়ের জন্য আমরা প্রস্তুত।” তার বক্তব্যেই জোরালো হয়ে ওঠে যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভ আরও কঠোর সুরে আফগানিস্তানকে দায়ী করেন। তিনি দাবি করেন, তদন্তে ইসলামাবাদ ও ওয়াজিরিস্তানের হামলায় আফগান ভূমিকা শনাক্ত করা গেছে। তবে কাবুল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে নিরাপত্তা বাহিনী দেশজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে। ইসলামাবাদ হামলায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটকের কথা জানিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। খাইবার অঞ্চলেও অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, দুটি হামলার ধরন, বিস্ফোরকের ব্যবহার এবং লক্ষ্যবস্তুর মিল দেখে মনে হচ্ছে এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং বড় একটি পরিকল্পনার অংশ হতে পারে। প্রশ্ন এখন—এই পরিকল্পনার পেছনে কারা? উদ্দেশ্যই বা কী?

অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংকট, সীমান্ত উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক চাপ—সব মিলিয়ে পাকিস্তান, ভারত ও আফগানিস্তান অঞ্চলে এক ধরনের অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। হামলার প্রকৃত সূত্র এখনো অস্পষ্ট থাকলেও এর প্রভাব পুরো অঞ্চলের ওপর পড়তে শুরু করেছে।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর