[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পানি সংকটে ভারতের ৮০ বিলিয়ন ডলারের কয়লা প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৫ ০০:০৬ এএম

ফাইল ছবি

বড় পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথে এগোচ্ছে ভারত। ২০৩১ সালের মধ্যে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নতুন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশটি। যার বেশির ভাগই গড়ে উঠছে তীব্র পানির সংকটগ্রস্ত এলাকায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ প্রকল্পগুলোর ফলে শিল্প ও সাধারণ মানুষের মধ্যে পানি নিয়ে বিরোধ আরো তীব্র হতে পারে।

মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলার মানুষ আগে দুদিন পরপর পানি পেতেন। এখন গরমকালে একটানা সাতদিনও পানির দেখা মেলে না। অথচ এ এলাকাতেই ২০১৭ সালে চালু হয়েছে এক বিশাল কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র, যেটি পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হয় প্রচুর পানি। রয়টার্স জানাচ্ছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এমন একটি জলাধার থেকে পানি নিচ্ছে, যা আগে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করতেন।
 
সরকারি নথি বলছে, নতুন ৪৪টি কয়লা প্রকল্পের মধ্যে ৩৭টিই গড়ে উঠছে এমন এলাকায়, যেগুলোতে পানির সংকট রয়েছে। ভারতের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ন্যাশনাল থার্মাল ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি)। সংস্থাটি বলছে, সংকট সমাধানে পানি পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
 
তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি পাওয়া যাচ্ছে কিনা তার আগে ভাবতে হয় জমির কথা। যেখানে জমি পাওয়া যায়, সেখানে পানি না থাকলেও তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেন।
 
২০০৮ সালে সোলাপুরকে পানি সংকটগ্রস্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এর পরও সেখানে বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দেন তৎকালীন বিদ্যুৎমন্ত্রী। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১২০ কিলোমিটার দূর থেকে পানি এনে চলে। এতে খরচ বাড়ে, আবার পথে পানি চুরি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
 
সোলাপুর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রপুরে আছে ভারতের বড় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর একটি। গ্রীষ্মে পানির অভাবে প্রায়ই বন্ধ রাখতে হয় প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ কেন্দ্রটিকে। এর মধ্যেও সেখানে আরো ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা যোগ করার কাজ চলছে। অথচ বিপুল উৎপাদনের জন্য পানি কোথা থেকে আসবে, সেটাই এখনো নিশ্চিত নয়।
 
২০১৭ সালে একবার খরার মধ্যে এ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। তখন এক বিধায়ক বলেছিলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পানি গৃহস্থালির প্রয়োজনে ব্যবহার করতে দেয়া হোক। কিন্তু ঘটনাচক্রে তিনিই এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্প্রসারণের পক্ষে কথা বলছেন।’
 
সূত্র: বণিক বার্তা

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর