সব জায়গায় প্রভাব বিস্তার করতে পারলেও, ইরানের সাথে যেনো পেরেই উঠছেন না বিশ্ব মোড়ল ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেজেশকিয়ান বলেছেন, ট্রাম্প যা ইচ্ছা তা করতে পারেন, এতে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বে না। ট্রাম্পের পাঠানো চিঠির জবাবে এমনটাই মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইরান কোনো প্রকার হুমকির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা করতে রাজি নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এসময়, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেন, তিনি যা খুশি তা করতে পারেন। এর আগে, ইরানকে একটি চিঠি পাঠিয়ে নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পেজেশকিয়ানের উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নির্দেশনা ও হুমকি ইরানের জন্য মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করবেন না। অর্থাৎ, ট্রাম্প এখন নিজের ইচ্ছানুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
গত শনিবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, তেহরানকে আলোচনার টেবিলে আনার জন্য কোন ধরনের হুমকি কার্যকর হবে না। সেসময় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তেহরান মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য কোন চিঠি পায়নি। ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মূল উদ্দেশ্য আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা নয়, বরং তারা এই অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চায়।
এর আগে, ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তিনি তেহরানের সাথে ২০১৫ সালে স্বাক্ষর করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন। তিনি ৬টি বিশ্বশক্তির সাথে করা চুক্তির শর্তগুলো বাতিল করেন ও পুনরায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেন। তবে, ইরান ২০১৯ সাল থেকে তার পারমাণবিক কার্যক্রম আরও তরান্বিত করেছে।
এবার, তেহরানের সাথে চুক্তি করার সম্ভাবনা উন্মুক্ত রাখার কথা বললেও, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ইরানকে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে আলাদা করতে ও দেশটির তেল রপ্তানি শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে যে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করেছিলেন, তা পুনরায় চালু করেছেন।
এদিকে ফক্স বিজনেসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ইরানকে মোকাবিলা করার দুটি পন্থা রয়েছে: একদিকে সামরিক ব্যবস্থা নিতে হবে, অথবা তাদের সাথে একটি চুক্তি করতে হবে, যাতে তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত থাকে। যদিও, বহুদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে ইরান। তবে, ইরান নাটকীয়ভাবে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি বাড়িয়েছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা-আইএইএ।
সোর্স: বণিক বার্তা
মন্তব্য করুন: