পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে টানা কয়েক সপ্তাহের সংঘর্ষের পর অবশেষে তোর্খাম সীমান্তে সাময়িক অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। রবিবার ( ৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর দুই পক্ষ দুই দিনের জন্য গোলাগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে কোনো নির্মাণকাজও চালানো হবে না বলে জানানো হয়েছে।
তোর্খাম সীমান্ত পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া ও আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশকে সংযুক্ত করে। গত মাসে পাকিস্তান সেখানে আফগান বাহিনীর একটি নতুন চেকপোস্ট নির্মাণ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। দুই পক্ষের মধ্যে টানা সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন, আর শত শত পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
রবিবার তোর্খামে এক বিশেষ 'জিরগা' বা উপজাতীয় পরিষদ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দুই দেশের প্রতিনিধি ও স্থানীয় উপজাতি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর জানানো হয়, বুধবার পর্যন্ত অস্ত্রবিরতি থাকবে এবং সীমান্তে নতুন কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হবে না। আলোচনার পরবর্তী ধাপে সীমান্ত পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তোর্খাম সীমান্ত বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া, প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার আফগান নাগরিক পাকিস্তানে চিকিৎসা ও জীবিকার জন্য প্রবেশ করেন। এই সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে নানা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনার কেন্দ্রস্থল হয়ে আছে।
সম্প্রতি, পাকিস্তান অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করছে, আফগানিস্তান পাকিস্তানে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে, যদিও তালেবান সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সাম্প্রতিক অস্ত্রবিরতি সীমান্ত উত্তেজনা কমানোর ইঙ্গিত দিলেও দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের প্রয়োজনীয়তা এখনও বিদ্যমান।
সোর্স: ইনকিলাব
মন্তব্য করুন: