দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সিউলের একটি আদালত। গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার প্রচেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মঙ্গলবার যৌথ তদন্ত সদর দফতরের আবেদনের পর পরোয়ানাটি অনুমোদন করেছে সিউল ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট। ইউনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের তদন্ত চলছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খব
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে সিউলের একটি আদালত। গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করার প্রচেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। মঙ্গলবার যৌথ তদন্ত সদর দফতরের আবেদনের পর পরোয়ানাটি অনুমোদন করেছে সিউল ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট। ইউনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের তদন্ত চলছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার রাতে তদন্তকারীরা বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছেন। অবশ্য ইউনের আইনজীবী একে ‘অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
মার্শাল ল বা সামরিক আইন ঘোষণার পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়া রাজনৈতিক সংকটে রয়েছে। ইউন ও তার একজন উত্তরসূরী উভয়কেই পার্লামেন্টে অভিশংসিত করা হয়েছে।
ইউন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম বর্তমান প্রেসিডেন্ট যিনি গ্রেফতারের মুখোমুখি হয়েছেন।
তদন্তকারীদের তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হেফাজতে নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে আদালতের পরোয়ানা। তবে তদন্তকারীরা পরোয়ানাটি কার্যকর করতে পারবেন কিনা তা অনিশ্চিত, কারণ তার নিরাপত্তা দল এবং প্রতিবাদকারীরা তাদের বাধা দিতে পারেন। গত দুই সপ্তাহে তিনি ৩টি সমন উপেক্ষা করেছেন।
এর আগে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস তদন্তকারীদের প্রেসিডেন্সিয়াল অফিস প্রাঙ্গণ এবং ইউনের ব্যক্তিগত বাসভবনে আদালত-অনুমোদিত তল্লাশি চালাতে বাধা দেয়।
অতীতে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা পরিত্যাগ করেছে যখন তাদের সহায়ক এবং সমর্থকরা শারীরিকভাবে পুলিশকে বাধা দিয়েছে।
সোমবার ইউনের আইনি দল জানিয়েছে, তদন্তকারীদের তাকে গ্রেফতার করার কোনও কর্তৃত্ব নেই। কারণ মার্শাল ল ঘোষণা করা সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে।
ইউন তার মার্শাল ল ঘোষণার সিদ্ধান্তকে আগেও সমর্থন করেছেন। শেষ পর্যন্ত লড়াই করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। অবশ্য তিনি বলেছেন, আইনগত ও রাজনৈতিক দায়িত্ব এড়াবেন না তিনি ।
তার আইনজীবী ইউন গ্যাপ-গিউন বলেছেন, আগের তিনটি সমন মেনে না চলার কারণ ছিল "বৈধ উদ্বেগ"। অবশ্য ইউনের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে তার বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
যদিও ১৪ ডিসেম্বর সংসদ সদস্যদের ভোটে ইউন বরখাস্ত হওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রয়েছেন। তবে তাকে শুধু দেশের সাংবিধানিক আদালত তার অভিশংসন বহাল রাখলে পদ থেকে সরানো যাবে।
বর্তমানে সাংবিধানিক আদালতের নয় সদস্যের বেঞ্চে মাত্র ছয়জন বিচারক রয়েছেন। এর অর্থ একটি প্রত্যাখ্যানই ইউনকে অপসারণ থেকে রক্ষা করতে পারে।
বিরোধী সংসদ সদস্যরা আশা করেছিলেন, অতিরিক্ত তিনজন বিচারক মনোনয়ন দিয়ে ইউনের অভিশংসনের সম্ভাবনা বাড়াবে। তবে প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু গত সপ্তাহে তাদের প্রস্তাব নাকচ করেছেন।
এরপর বিরোধীরা হানকেও অভিশংসন করেছে। আর এখন অর্থমন্ত্রী চোই স্যাং-মককেও অভিশংসিত করবে হুমকি দিচ্ছে তারা। চোই বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী উভয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।
মন্তব্য করুন: