প্রকাশিত:
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:১২ পিএম
বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের হুমকির মুখে গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়েছেন সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এই ঘটনায় সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াই করা লেবাননের সশস্ত্র আন্দোলন হিজবুল্লাহ।
কারণ ইরান থেকে সিরিয়া হয়ে অস্ত্রের চালান আসতো হিজবুল্লাহর কাছে। আসাদের পতনে ইসরাইল সিরিয়া ব্যাপক হামলা চালিয়ে বহু অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে।
সিরিয়ার সরকার পতনের পর প্রথমবার মুখ খুলেছে আসাদের মিত্র হিজবুল্লাহ। অথচ আসাদের পতনের ঠিক কয়েকদিন আগেও সিরিয়াতে বিদ্রোহীরা পরাজিত হবে বলেছিল গোষ্ঠীটি। কিন্তু নাটকীয় পরিস্থিতিতে উৎখাত হয়েছেন বাশার আল-আসাদ। আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে ঘটে এবং তার পরিবারের পাঁচ দশকের ক্ষমতার চক্র ভেঙে যায়।
হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান শেখ নাঈম কাশেম শনিবার স্বীকার করেছেন বিদ্রোহী আক্রমণের মাধ্যমে বাশার আল-আসাদের শাসনের পতনের পর সিরিয়ার মধ্য দিয়ে অস্ত্র সরবরাহের পথ তারা হারিয়েছে।
কাসেম তার টেলিভিশন ভাষণে আসাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, এই নতুন বাহিনী (সিরিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী) স্থিতিশীল এবং সুস্পষ্ট অবস্থান না নেওয়া পর্যন্ত হিজবুল্লাহ কোনো বিচার করবে না। তিনি আশা করেন, লেবানিজ এবং সিরিয়ার জনগণ এবং সরকার সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে পারে।
তিনি বলেন, হ্যাঁ, এই পর্যায়ে হিজবুল্লাহ সিরিয়ার মধ্য দিয়ে সামরিক সরবরাহের পথ হারিয়েছে, তবে এটি প্রতিরোধ অক্ষের জন্য বিশদ ক্ষতি।
হিজবুল্লাহপ্রধান বলেন, একটি নতুন রেজিম সিরিয়া শাসনে আসতে পারে এবং এই রুটটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে এবং আমরা অন্য উপায় খুঁজতে পারি।
সিরিয়া হিজবুল্লাহর পৃষ্ঠপোষক ইরানকে লেবাননে অস্ত্রের চালান পাঠানোর জন্য একটি স্থল পথ দিয়েছিল। এই ধরনের চালান প্রায়শই ইসরাইলি বিমান হামলার দ্বারা লক্ষ্যবস্তু হয়। কিন্তু হিজবুল্লাহ এরপরও গোপনে ভারী সামরিক সরঞ্জাম আদান প্রদানে সক্ষম হয়েছিল।
হিজবুল্লাহ ২০১৩ সালে সিরিয়ায় আসাদের ক্ষমতাচ্যুত ঠেকাতে বিদ্রোহীদের দমন করতে সহায়তা করে। আর গত সপ্তাহে, বিদ্রোহীরা দামেস্কের কাছে আসার সাথে সাথে গ্রুপটি সেখানে তার যোদ্ধাদের প্রত্যাহারের তদারকি করার জন্য তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তাদের পাঠায়।
নতুন সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে নাঈম কাসেম বলেন, আমরা আশা করি ক্ষমতায় থাকা এই নতুন দলটি ইসরাইলকে শত্রু দেশ হিসাবে দেখবে এবং তার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না।
সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলা নিয়ে জবাব দিয়েছেন বাশার আল-আসাদ সরকারকে উৎখাতের নেতৃত্ব দেওয়া ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। শনিবার ক্ষমতাগ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ইসরাইল সম্পর্কে কথা বলেছেন তিনি।
সিরিয়ার টিভি নিউজ চ্যানেলের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে আল-জোলানি বলেন, সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানোর জন্য ইসরাইলের অজুহাত থাকতে পারে না এবং সাম্প্রতিক সময়ে আইডিএফ সিরিয়ার মাটিতে হামলা লাল রেখা অতিক্রম করেছে এবং এই অঞ্চলে একটি অযৌক্তিক উত্তেজনা বৃদ্ধির হুমকি দিয়েছে।
মন্তব্য করুন: