রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ আবারও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এবারের প্রজাতি আগের তুলনায় অনেক বেশি আক্রমণাত্মক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। জ্বর সেরে যাওয়ার পর হঠাৎ করেই রক্তচাপ কমে যাওয়া, প্লাটিলেট হ্রাস ও শক সিনড্রোমের কারণে মৃত্যু বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে।
সম্প্রতি রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনায় দেখা গেছে—রোগীরা প্রথমে হালকা জ্বরের পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছিলেন, কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে দ্রুত অবনতি ঘটে আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করেছেন। চিকিৎসকদের মতে, এবারের ভাইরাসে তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এবং সংক্রমণের পর স্বল্প সময়ের মধ্যেই গুরুতর জটিলতা দেখা দিচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৫১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি পুরুষ। মৃত্যুর মধ্যে ৬৮ শতাংশ রোগী ভর্তি হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই এবং ৪৬ শতাংশ ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেছেন।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, দেরিতে হাসপাতালে আসা, পর্যাপ্ত ফ্লুইড ব্যবস্থাপনার অভাব এবং দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ঝুঁকি এই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। অনেক রোগী ‘এক্সপ্যান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোমে’ আক্রান্ত হয়ে লিভার, কিডনি ও হৃদযন্ত্রের জটিলতায় পড়ছেন।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, প্রাথমিক পর্যায়ে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও সঠিক ফ্লুইড ব্যবস্থাপনাই মৃত্যুহার কমানোর একমাত্র উপায়। তারা বলছেন, শহর ও গ্রামে দ্রুত ডেঙ্গু পরীক্ষা চালু করা জরুরি—কারণ, এখনকার ডেঙ্গু চেনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন: