নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দিতে আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। মার্চের প্রায় শুরু থেকেই রোজা ও ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার কথা। বই হাতে পাওয়ার পর যদি ছুটি শুরু হয়ে যায়, তাহলে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ ছাড়া পুরোপুরিভাবে ক্লাস শুরু করা সম্ভব নয়। এতে এক বছরের সিলেবাস আট মাসে শেষ করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের
নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছে দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দিতে আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। মার্চের প্রায় শুরু থেকেই রোজা ও ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার কথা। বই হাতে পাওয়ার পর যদি ছুটি শুরু হয়ে যায়, তাহলে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ ছাড়া পুরোপুরিভাবে ক্লাস শুরু করা সম্ভব নয়।
এতে এক বছরের সিলেবাস আট মাসে শেষ করতে হবে। এতে শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের শিখন ঘাটতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই বইয়ের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি।
এরপর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ১২ কোটি বইয়ের কার্যাদেশ ও চুক্তিপত্র শেষে এই সপ্তাহেই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। তবে ১০ ও ১১ ডিসেম্বর চতুর্থ, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির কার্যাদেশ দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে প্রেস মালিকদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। ফলে এই তিন শ্রেণির বইয়ের কাজ শুরু হয়নি। আর নবম ও দশম শ্রেণির বইয়ের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন শেষ হলেও এখনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি।
স্কুল-কলেজে এক শিক্ষাবর্ষে সাধারণত ৭৬ দিনের ছুটি থাকে। এর সঙ্গে দুই দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি যোগ করলে আরো ১০৪ দিন বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই হিসাবে এক বছরে ক্লাস-পরীক্ষা চলে ১৮৫ দিন। আর এই অনুসারেই শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আগামী মার্চের প্রায় শুরু থেকেই রোজা ও ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার কথা। এখন বই হাতে পাওয়ার পর যদি ছুটি শুরু হয়ে যায়, তাহলে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ ছাড়া পুরোপুরিভাবে ক্লাস শুরু করা সম্ভব নয়। এতে এক বছরের সিলেবাস আট মাসে শেষ করতে হবে। শিক্ষকরা এই সময়ে জোর করে পড়া চাপিয়ে দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ঠিকমতো আয়ত্তে নিতে পারবে না। এতে আগামী বছর বড় ধরনের শিখন ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
শিক্ষকরা বলছেন, গত দুই বছর নতুন শিক্ষাক্রমে পড়ালেখা করেছে শিক্ষার্থীরা। সেখানে ভিন্নধর্মী পড়ালেখায় শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো চাপ নিতে হয়নি। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যেতে হয়েছে। এতে এমনিতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থীই তাল মেলাতে পারছে না। তারা এ বছরের বার্ষিক পরীক্ষায় খুব খারাপ করেছে। এখন যদি আবার বই পেতে পেতে তিন মাস সময় চলে যায়, তাহলে বড় ধরনের দুর্ভোগে পড়বে শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কিশলয় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেভাবেই হোক, পাঠবিমুখ হয়েছে। এখন বই যদি দেরিতে পাওয়া যায়, তাহলে এক বছরের শিক্ষাক্রম কম সময়ে শেষ করতে হবে। এতে শিক্ষকদের যেমন চাপ নিতে হবে, তেমনিভাবে শিক্ষার্থীদের আরো বেশি চাপ নিতে হবে। যেসব শিক্ষার্থী চাপ নিতে পারবে না, তারা শিখন ঘাটতিতে পড়বে। তবে আমরা সাধারণত দেখি, ক্লাস না হলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না। তাই যত দিন পুরোপুরিভাবে ক্লাস শুরু না হয়, তত দিন সহশিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করার পরামর্শ থাকবে।’
মন্তব্য করুন: