মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নিলীমা দাস, কুমিল্লা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূইয়া (অব.), স্ত্রী মাহমুদা আখতার ও ছেলে মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীসহ ২৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নিলীমা দাস, কুমিল্লা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূইয়া (অব.), স্ত্রী মাহমুদা আখতার ও ছেলে মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীসহ ২৭ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিততে এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন সার্বিক) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অপর ব্যক্তিরা হলেন মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টের (আরএইচডি পার্ট) পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী মোসা. নুসরাত জাহান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার রাশেদুল আলম, পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শেখ আবুল কালাম আজাদ, নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) আমিনুল ইসলাম, চেয়ারম্যান মোছা. ইসরাত জাহান, শেয়ারহোল্ডার ইজাজ আবরার, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মিফতাহ উদ্দিন, সেঞ্চুরি ফুড প্রডাক্ট লিমিটেডের এমডি আরিফুল ইসলাম, পরিচালক মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লি.-এর সাবেক কর্মকর্তা মিঠু কুমার সাহা, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লি.-এর সাবেক এমডি রাসেল শাহরিয়ার, প্রতিষ্ঠানটির আজিমুল হক, মনিরুজ্জামান আকন, ফয়সাল আলম, আউয়াল হোসেন, নিজাম উদ্দীন, মহিন উদ্দিন, নুর করিম ও মোক্তার হোসেন পাটোয়ারী।
এদিন দুদকের পক্ষ থেকে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ৬টি পৃথক আবেদন করা হয়। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন।
সুবিদ আলীর আবেদন বলা হয়, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূইয়া ও তার ছেলে মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক চাঁদাবাজি, লুটপাট, ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
অনুসন্ধানের বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিদেশ গমন রহিতকরণ একান্ত প্রয়োজন।
মৃণাল কান্তি দাসের আবেদনে বলা হয়, মৃণাল কান্তি দাস ১০ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। মৃণাল কান্তি দাস অবৈধ আয়ে ঢাকার ধানমণ্ডি আবাসিক এলাকায় ১৭৮৫ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় সাড়ে ৭ কাঠা আয়তনের একটি প্লট যার আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা। নিজ নামীয় ব্যংক হিসাবে এক ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯১ টাকা। ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬৩১ টাকার গাড়ি এবং তার স্ত্রী নিলীমা দাসের নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১০৫ কাঠার প্লটের ওপর বহুতল ভবন ও স্ত্রীর নামে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ১৯১ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেছেন মর্মে গোপন সূত্রে জানা যায় যায়।
মৃণাল কান্তি দাস এবং তার স্ত্রী নিলীমা দাস অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন: