[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

বাড়ি কিনলেই মিলবে নাগরিকত্ব!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৮:০৭ পিএম

ফাইল ছবি

নির্মল সমুদ্রসৈকত, রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া আর শান্তিপূর্ণ জীবনযাত্রা—পূর্ব ক্যারিবিয়ান দেশগুলো বরাবরই পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অঞ্চলটির প্রতি ধনী ক্রেতাদের ঝোঁক বেড়েছে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুবিধার কারণে। এখন অনেকের কাছেই ক্যারিবিয়ান হয়ে ওঠেছে ‘সেফ হ্যাভেন’।

বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক বিভাজন এবং উচ্চ করের বাস্তবতায় অনেকেই খুঁজছেন বিকল্প পাসপোর্ট।

এই প্রেক্ষাপটে ক্যারিবিয়ানের পাঁচটি দেশ— অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস এবং সেন্ট লুসিয়া—অন্তত দুই লাখ ডলারের বিনিয়িময়ে নাগরিকত্ব দিচ্ছে। 

এই স্কিমে যারা একটি নির্দিষ্ট মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ি কিনবেন, তারা শুধু একটি সম্পত্তির মালিকই হবেন না, পাবেন ঐ দেশের পাসপোর্টও। আর এই পাসপোর্টে মিলবে যুক্তরাজ্য, ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলসহ দেড় শতাধিক দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণের সুবিধা।

ধনীদের কাছে এসব পাসপোর্ট আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেছে কর-মুক্ত সুবিধার কারণে।

ক্যারিবিয়ান এই দেশগুলোতে নেই মূলধন কর, উত্তরাধিকার কর এবং আয়করও প্রায় অপ্রযোজ্য। পাশাপাশি, আগ্রহীরা নিজেদের মূল নাগরিকত্ব রেখেই পেতে পারেন এই 'সেকেন্ড সিটিজেনশিপ'।

অ্যান্টিগুয়াভিত্তিক বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট কম্পানি ‘লাক্সারি লোকেশন ‘-এর মালিক নাদিয়া ডাইসনের ভাষ্য অনুযায়ী, বর্তমানে তার প্রায় ৭০ শতাংশ ক্রেতাই নাগরিকত্বের উদ্দেশ্যে সম্পত্তি কিনছেন, যাদের অনেকেই মার্কিন নাগরিক।

যদিও অ্যান্টিগুয়ার নাগরিকত্ব পেতে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের বাধ্যবাধকতা নেই, তবু ডাইসন বলছেন, অনেকেই সেখানে বসবাসের জন্যও আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন স্থায়ীভাবে অ্যান্টিগুয়ায় বসতি স্থাপন করেছেন বলেও জানান তিনি।

বিনিয়োগ-ভিত্তিক অভিবাসন সংস্থা ‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’-এর তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর নাগরিকত্ব কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের পক্ষ থেকেই। এছাড়া ইউক্রেন, তুরস্ক, নাইজেরিয়া এবং চীন থেকেও অনেকেই আবেদন করছেন। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে এই স্কিমে আবেদন ১২ শতাংশ বেড়েছে।

তবে এই ‘সোনার হরিণ’ নাগরিকত্ব স্কিম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উঠছে প্রশ্নও।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন আশঙ্কা করছে, ঢিলেঢালা যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগে অপরাধীরা বৈধ নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে। ফলে এসব দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার স্থগিত করার হুমকিও দিয়েছে ইইউ।

একই ভাবে, যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করেছে, বিনিয়োগের বিনিময়ে নাগরিকত্বের এই প্রোগ্রামগুলো অর্থপাচার ও কর ফাঁকির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, ২০২২ সাল থেকেই ক্যারিবিয়ান এই পাঁচটি দেশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং নাগরিকত্ব স্কিমের ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণও চালানো হচ্ছে।

সোর্স: কালের কন্ঠ 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর