আবারো আলোচনায় টেলিগ্রাম অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা রাশিয়ায় জন্ম নেওয়া ধনকুবের পাভেল দুরভ। তবে এবার প্রযুক্তির কারণে নয়, বরং তার পিতৃত্ব পরিকল্পনার কারণে আলোচনায় এসেছেন তিনি।
৪০ বছর বয়সী এই বিলিয়নিয়ার নিজেই জানিয়েছেন, তিনি এখনো বিয়ে করেননি, একাই থাকেন। কিন্তু ১২টি ভিন্ন দেশে তার একশোরও বেশি সন্তান আছে, যাদের অধিকাংশই জন্মেছে স্পার্ম ডোনেশনের মাধ্যমে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দুরভ বলেন, তার প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি এই সন্তানদের মধ্যেই ভাগ করে দেয়া হবে। তার কথায়, ‘তারা সবাই আমার সন্তান, সবাই সমান অধিকার পাবে। আমি চাই না, আমার মৃত্যুর পর সম্পদের জন্য তারা একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করুক।’
এতগুলো সন্তান জন্মদানের বিষয়ে দুরভ জানিয়েছেন, এটি তার ‘সামাজিক দায়িত্ব’। বিশ্বজুড়ে জন্মহার কমে যাচ্ছে দেখে তিনি চান বেশি করে সন্তান হোক। তাই এই ব্যক্তিগত উদ্যোগ। মস্কোর একটি আইভিএফ ক্লিনিকে যে কেউ চাইলে তার স্পার্ম দিয়ে বিনামূল্যে সন্তান ধারণ করতে পারবেন। এখনো ওই ক্লিনিকে তার স্পার্ম সংরক্ষিত আছে।
প্রথমবার তিনি স্পার্ম দান করেন ১৫ বছর আগে, একজন বন্ধুকে সাহায্য করতে গিয়ে। এরপর ক্লিনিকের প্রধান তাকে বলেন, উচ্চমানের ডোনার পাওয়া যাচ্ছে না। আর এটা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তার দায়িত্ব। তখন থেকেই তিনি নিয়মিতভাবে দান করতে শুরু করেন।
দুরভ বলেন, তিনি চান মানুষ স্পার্ম ডোনেশনকে লজ্জার কিছু না ভেবে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করুক। অন্য পুরুষরাও যাতে উৎসাহ পায়, সে উদ্দেশ্যেই তিনি এগোচ্ছেন।
তবে একজন মানুষের এতগুলো সন্তান হওয়া নিরাপদ কি না এই প্রশ্নও জোরালো হচ্ছে। একদিকে আছে একাধিক ভাইবোনের অজান্তে ভবিষ্যতে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ঝুঁকি। অন্যদিকে আছে মানসিক চাপ, যখন কেউ হঠাৎ জানতে পারে, তার আরো ১০০ ভাইবোন রয়েছে! এমনকি যদি ডোনারের দেহে কোনো জেনেটিক রোগ থাকে, তাহলে তা বহু সন্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে।
আইনগত দিক থেকেও বিষয়টি জটিল। কিছু দেশে যেমন ফ্রান্সে, একজন ডোনার কত সন্তান জন্ম দিতে পারবেন তার উপর কঠোর সীমা আছে। কিন্তু রাশিয়া বা আমেরিকার মতো দেশে এমন কোনো জাতীয় সীমা নেই। অনেক বড় স্পার্ম ব্যাঙ্ক নিজেরা কিছু সীমা মেনে চলে, ২৫ থেকে ৭৫টি পরিবারে সীমাবদ্ধ রাখে। কিন্তু দুরভের মতো ব্যক্তিগত উদ্যোগ একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
এই বাস্তবতায় ইউরোপের কিছু দেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে ডোনারদের সংখ্যা নির্ধারণে উদ্যোগ নিচ্ছে। তারা চাইছে, যেন এমন একটি সর্বজনীন সীমা নির্ধারণ করা হয় যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি আর না ঘটে।
সোর্স: বণিক বার্তা
মন্তব্য করুন: