প্লাস্টিকের রঙ-বেরঙের পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে তিন কক্ষবিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন বাড়ি নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সুন্দরগঞ্জের অটোচালক আব্দুল হাকিম। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি খানপাড়ার প্রত্যন্ত গ্রামে নির্মাণকাজ চলছে বাড়িটির। ছাদ ঢালাইসহ বাড়ির কাজ কিছুটা বাকি থাকলেও এরই মধ্যে এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে বাড়িটি।
সরেজমিন দেখা যায়, পরিত্যক্ত বিভিন্ন প্লাস্টিকের বোতলে বালু ভরে এরপর তা ব্যবহার করা হচ্ছে বাড়ির দেয়াল তৈরিতে। ইটের বদলে সারি সারি প্লাস্টিকের বোতলে সিমেন্টের গাঁথুনি দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এসব দেয়াল। শখ করে এলাকাবাসী বাড়িটির নাম দিয়েছে বোতল বাড়ি। প্রথম প্রথম বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণের এমন পদ্ধতি দেখে হাসি-তামাশা করলেও এখন বাড়িটি নিয়ে গর্ব করছে স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে আব্দুল হাকিম পরিত্যক্ত বোতল সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে অটোতে করে এনে মজুত করেন। জানতে চাইলে বলেন, বাড়ি বানাব। প্রথমে এসব নিয়ে অনেক হাসি-তামাশা হলেও এখন সত্যিই বাড়ি বানানো হয়েছে। বাড়িটি দেখতে অনেকে আসে। হাকিমের এমন কাজ এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বাড়ি নির্মাণে পরিত্যক্ত বোতল ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিলেন অনেকে। তবে তার পাশে উৎসাহ জুগিয়েছে তার সহধর্মিণী আনচুমারা বেগম। এখন নির্মিত বাড়ি দেখে সবাই খুব খুশি।
আব্দুল হাকিম বলেন, তিনি ইউটিউবে দেখেছেন বোতলের বাড়ি। তাই তিনি বিভিন্ন ভাঙারির দোকান থেকে পরিত্যক্ত বিভিন্ন বোতল সংগ্রহ করেন। এরপর সিমেন্ট বালু ম্যানেজ করে কাজ শুরু করি। প্রথমে অনেকে আমাকে পাগল বলত কিন্তু যখন বাড়ি নির্মাণ শুরু করলাম তখন সবাই বেশ খুশি এবং প্রতিনিয়ত বাড়িটি দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক আসে। এজন্য আমারও ভালো লাগে। আশা করছি বাড়িটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে দেখতে সুন্দর লাগবে টেকসই ও মজবুত হবে। ইটের চেয়ে এই বাড়ি নির্মাণে ব্যয় কিছুটা কম হবে। এদিকে অভিনব পদ্ধতিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ করতে পেরে খুশি রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিকরা।
রাজমিস্ত্রি বাদশা মিয়া জানান, আমি প্রথমে ইউটিউব দেখে আমার নিজের বাড়ি লালমনিরহাটে বোতলের বাড়ি করি। পরে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জে আমাকে বোতলের বাড়ি করার জন্য ডাকে। এখানে এসে বাড়ি করছি। আশা করছি ইটের চেয়ে বোতলের বাড়ি মজবুত ও টেকসই হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শুনেছি আমাদের উপজেলায় পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। আমি এখনো সেটা পরিদর্শন করিনি। পরিদর্শন করে বলতে পারব সেটা কতটা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হবে।
সোর্স: যুগান্তর
মন্তব্য করুন: