ajbarta24@gmail.com শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

"কমলা নাকি হলুদ: কোন রঙের কুসুমে মিলবে বেশি পুষ্টি?"

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:০২ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ৪:৩২ পিএম

সংগৃহীত

ডিমের কুসুম পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই কুসুম হতে পারে নানান রঙের—হালকা হলুদ, সোনালি, লালচে কমলা। কেন কুসুমের রঙে এত তারতম্য দেখা যায়? সবই কি নিরাপদ? নানান রঙের কুসুমের মধ্যে সেরাই–বা কোনটি?

ডিম দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই, কুসুমের রং কী হবে। তবে কোথা থেকে ডিম নেওয়া হলে সেটির কুসুমের রং কেমন হয়, কেনাকাটা করতে করতেই এ সম্পর্কে একটা ধারণা হয়ে যেতে পারে আপনার। তাহলে কোথা থেকে কেনা ডিম সবচেয়ে ভালো হবে, তা আপনি নিজেই বুঝে নিতে পারবেন, যদি কুসুমের রঙের গুরুত্ব আপনার জানা থাকে। এ বিষয়ে জানালেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।

কেন হয় রঙের তারতম্য
মুরগি বা হাঁসের খাবারের ওপর নির্ভর করে ডিমের কুসুমের রং। খাবার যদি হয় গম, তাহলে ডিমের রং হয় হালকা হলুদ। ভুট্টা বা সয়াজাতীয় খাবার খাওয়ানো হলে ডিম হয় হলুদ রঙের। বাণিজ্যিকভাবে খামারগুলোতে এ–জাতীয় খাবার দেওয়া হয়। তবে যেসব মুরগি ও হাঁস বাড়ির কাছে চড়ে বেড়ায়, বাগান কিংবা রান্নাঘরের বহুবিধ উচ্ছিষ্ট খায়, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আলাদা। নানান ধরনের বীজ, ঘাস, আগাছা ও খুদে পোকামাকড় খাওয়ার কারণে তারা খাবার থেকে ক্যারোটিনজাতীয় উপাদান বেশি পায়। আর এই ক্যারোটিনের জন্য কুসুমের রং হয় উজ্জ্বল সোনালি, কমলা বা লালচে।

প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান সেদ্ধ আর ভাজা ডিমে প্রায় কাছাকাছি পরিমাণ থাকে।

পুষ্টিগুণে সেরা কুসুম কোনটি
নানান ধরনের খাবার থেকে পাওয়া ক্যারোটিন যে কেবল ডিমের কুসুমের রংই দেয়, তা কিন্তু নয়। বিটা ক্যারোটিন হলো ভিটামিন ‘এ’। তার মানে উজ্জ্বল সোনালি, কমলা বা লালচে রঙের ডিমে আপনি কিছুটা বেশি ভিটামিন ‘এ’ পেতে পারেন। নানা ধরনের খাবার খাওয়া মুরগি বা হাঁসের ডিমে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও বেশি থাকে। তবে আকারটাও গুরুত্বপূর্ণ। ডিমের আকার যদি খুবই ছোট হয়, তাহলে কিন্তু সেটির কুসুমে সব পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ আর অতটা বেশি পাবেন না। সে ক্ষেত্রে রোজকার পুষ্টির চাহিদা মেটাতে দেড়টি বা দুটি ডিম খেতে হতে পারে আপনাকে। অন্যদিকে হলুদ কুসুমের একটা মোটামুটি বড়সড় ডিম থেকেই আপনি প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেয়ে যাবেন।

তাহলে কোন ডিম খাবেন
বাণিজ্যিকভাবে পালা হাঁস ও মুরগির ডিম আকারে বড় বলেই যে সেটি বেছে নেওয়া ভালো, ব্যাপারটা কিন্তু এমনও নয়। এসব হাঁস ও মুরগির খাবারে নানান ধরনের রাসায়নিক যুক্ত হতে পারে। দ্রুত বেড়ে ওঠার জন্য গ্রোথ হরমোন দেওয়া হতে পারে। নিয়মবহির্ভূতভাবে অ্যান্টিবায়োটিকও প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পারে। তাই হলুদ কুসুমের ডিম খেতে হলেও এমন জায়গা থেকে নিতে চেষ্টা করুন, যেখানে বিধিমালা মেনেই হাঁস-মুরগি পালা হয়। অর্গানিক খাবার খাওয়ানো হয়, এমন কোনো জায়গাই বেছে নিতে পারেন।

তাহলে বুঝতেই পারছেন, বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাওয়া মুরগি ও হাঁসের ডিম দারুণ পুষ্টিকর। তুলনামূলক নিরাপদও বটে। তাই চেষ্টা করুন, খোলা উঠানে পোষা মুরগি বা হাঁসের ডিম কিনতে। অবশ্য আপনি চাইলেই যে সব সময় পোষা হাঁস বা মুরগির ডিম পাবেন, সেটাও তো নয়। আবার কুসুমের রং সোনালি, কমলা বা লালচে করার জন্য যে লালচে ধরনের রাসায়নিক মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো হয় না, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই নির্ভরযোগ্য মানুষের কাছ থেকে পোষা হাঁস বা মুরগির ডিম কেনাই সবচেয়ে ভালো।

সোর্স: প্রথম অলো 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর