[email protected] মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
১৬ বৈশাখ ১৪৩২

আন্তর্জাতিক সহায়তা কমিয়ে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:০২ পিএম

সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বলেছেন, যুক্তরাজ্য তার আন্তর্জাতিক সহায়তা বাজেট ৪০ শতাংশ কমিয়ে সেটি প্রতিরক্ষা খাতে খরচের পরিকল্পনা করছে।

যুক্তরাজ্য ২০২৭ সালের মধ্যে বার্ষিক প্রতিরক্ষা খরচ বাড়িয়ে জিডিপির ২.৫ শতাংশ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইউরোপের নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতি এবং রাশিয়ার সাথে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই ঘোষণা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন যাওয়ার একদিন আগে এই ঘোষণা দেন কিয়ার স্টারমার। তিনি মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে জানান, প্রতিরক্ষা খরচ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করা হচ্ছে, যাতে ইউরোপকে আরও সহায়তা দেওয়া যায়।

স্টারমার উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা বাজেট ২০২৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৩.৪ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার) বৃদ্ধি পাবে। চলতি অর্থবছরে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের প্রতিরক্ষা খরচ ৫৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড (৬৮.৩ বিলিয়ন ডলার) দাঁড়িয়েছে।

স্টারমার বলেন, 'আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। আমি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি যে... সমস্ত ইউরোপীয় মিত্রদের আমাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হবে।'

প্রতিরক্ষা খরচ বৃদ্ধির জন্য তহবিল সংগ্রহ করার ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাজ্য তার আন্তর্জাতিক সহায়তা বাজেট ৪০ শতাংশ কমিয়ে সেটি প্রতিরক্ষা খাতে খরচের পরিকল্পনা করছে। ২০২৭ সালে আন্তর্জাতিক সহায়তা বাজেট জিডিপির ০.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৩ শতাংশে নামানো হবে।

স্টারমার স্বীকার করেছেন, এটি ঘোষণা করাটা কঠিন ছিল। তবে তিনি একে বৈশ্বিক নিরাপত্তার 'নতুন যুগ' সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় মনে করেছেন।

এর আগে, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে কোভিড-১৯ মহামারির ফলে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক সংকটের সময় যুক্তরাজ্য সহায়তা বাজেট কমিয়ে ০.৭ শতাংশ থেকে ০.৫ শতাংশ করেছিল।

স্টারমার এই সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তিনি আশা করেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটকে আরও সমর্থন দেওয়ার জন্য নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপের দেশগুলোকে জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা সফল হলে ইউরোপ কিয়েভকে সমর্থন এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদান করবে– এ ব্যাপারে ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কিয়ার স্টারমার।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ একই লক্ষ্য নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

মাখোঁ ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার সকল সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করার পর আমি এখানে এসেছি জানাতে এসেছি যে একটি শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে এগিয়ে আসতে, নিজের মহাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষায় আরও বেশি কাজ করতে এবং … বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং বিনিয়োগে জড়িত হতে ইউরোপ প্রস্তুত।'

ইউক্রেনীয় বা ইউরোপীয় নেতাদের অংশগ্রহণ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিকদের মধ্যে আলোচনা শুরুর ব্যাপারে ট্রাম্পের পরিকল্পনা উত্তেজনা দেখা গিয়েছে।ওয়াশিংটনের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ইউরোপ।

সোমবার ট্রাম্প বলেছেন, 'ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত অনেক অগ্রগতি হয়েছে।'

এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমি খুশি যে প্রেসিডেন্ট মাখোঁ একমত হয়েছেন, শান্তি নিশ্চিত করার খরচ এবং দায়ভার ইউরোপীয় দেশগুলোরই বহন করতে হবে, একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রকেই নয়।'

তিনি বলেন, 'ইউরোপকেই ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে হবে, যা তারা করতে চায়।'

সোর্স: The Business Standard

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর