[email protected] মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
১৬ বৈশাখ ১৪৩২

সময় এসেছে বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের চিহ্নিত করার; জামায়াত

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:১২ এএম

ছবি সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার প্রকৃত রূপ-রহস্য ঘেরা এবং এখন প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করার সুযোগ রয়েছে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। যুগ যুগ ধরে জাতি তাদের অবদানের কথা স্মরণ করবে। ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করল? স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আজও জাতির সামনে তা তুলে ধরা হয়নি। যারা বন্দুকের নলে দেশকে লিজ দিতে চেয়েছিল এবং বিদেশি আগ্রাসনের এ হত্যার পেছনে দায় রয়েছে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সাংবাদিক, চিত্র নির্মাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির রায়হানের নিখোঁজের প্রসঙ্গ টেনে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের লড়াই সংগ্রাম ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঘটনার ডকুমেন্টারি গবেষণার কাজে হাত দিয়েছিলেন। বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে হত্যার কারণ, তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণ খুঁজে বের কর ছিলেন। জাতি ভেবেছিল জহির রায়হানের এ ডকুমেন্টারি প্রকাশ হলে অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাই তাকে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে আর খুঁজে পাওয়া গেল না। তার ডকুমেন্টারি কোথায় আজও তা জানা যায়নি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের ভোটাধিকার এ দেশের মানুষ নির্ধারণ করবে। ১৪, ১৮ এবং ২৪ তিনটা ভোট আমরা দিতে পারিনি। এ তিনটা ভোটই জনগণ বর্জন করেছে। আর একটি আধিপত্যবাদী শক্তি এ দেশে তাদের একজন সেবাদাস, দল দাসদের প্রলুব্ধ করে তাদের মনোনীত সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫৩ বছর পরও ভারত কখনো আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধুর পরিচয় দিতে পারেনি। আমরা ভারতের শত্রু নই, বরং ভারতে বছরে বছরে যারা শাসন ক্ষমতায় এসেছেন তারা আমাদের শত্রুতা করেছে। তারা আমাদের ক্ষতি চেয়েছে, আমরা তাদের ক্ষতি চাইনি। তাদের সহযোগিতায় স্বাধীন হয়েছি প্রচার করা হয়। তারা মূলত দুটি কারণে সাহায্য করেছে। প্রথমত. ১৯৬৫ সালের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া এবং দ্বিতীয়ত. বাংলাদেশকে অঙ্গরাজ্য বানানো। এ কারণেই বন্ধু সেজেছে।

ভারতকে উদ্দেশ করে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি, ইকোনমিক, বাংলাদেশের সামরিক অবকাঠামোর স্বার্থের চেয়ে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ অনেক বেশি। যেসব প্রকল্পগুলো অনেক বড় সেগুলো বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে লাভ হবে ভারতের আর কাজটা করাবে বাংলাদেশে।বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি, পদক্ষেপ, ব্যবসা-বানিজ্য এ ৫৩ বছরে করা হয়েছে।

তিনিবলেন, তাদের পছন্দ করা শাসক না হলে বাংলাদেশ চলবে না। এটা হচ্ছে তাদের নীতি। যারা তাদের চাওয়া-পাওয়া ও স্বপ্ন পূরণ করবে তারাই এ দেশ শাসন করবে। আমাদের মুসলিম জাতিসত্তা, মূল্যবোধ, চরিত্র, নৈতিকতা, শিক্ষা অর্জনে আমাদেরই আজন্ম স্বাধীন বাংলাদেশ লালিত আমরা যারা আল্লাহ তায়ালার গোলাম হয়ে আল্লাহর দীনের ভিত্তিতে জীবন গড়তে চাই, সেই স্বপ্ন, উদ্দেশ্য, প্রচেষ্টাকে তছনছ করে দিতে পারে যে শাসকরা তাদেরই এরা ক্ষমতায় রাখে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে আমরা শত্রু মনে করি না। ভারতের জনগণ আমাদের শত্রু নয়। ভারতে যারা শাসক এসেছেন, চরম সাম্প্রদায়িক একটি গোষ্ঠী ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আদর্শ এবং মূল্যবোধকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। এ দেশ যদি পদানত থাকে, একটি করদ রাজ্যে পরিণত হয়, ভারতের একটা বাজারে যদি পরিণত হয় তাহলে তো ভারতের লাভ বেশি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বিজয়ের এক দিন আগে বেছে বেছে সাংবাদিক, শিল্পী, গবেষক, শিক্ষক বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করল কারা? আধিপত্যবাদীরাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এটি স্পষ্ট। এ রহস্য উদ্ঘাটন করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে অপর নেতা আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বিজয়ের এক দিন আগে বেছে বেছে সাংবাদিক, শিল্পী, গবেষক, শিক্ষক বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করল কারা? আধিপত্যবাদীরাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এটি স্পষ্ট। এ রহস্য উদ্ঘাটন করে তাদের বিচারের আওতায় এনে জাতিকে সত্য জানার সুযোগ করে দিতে তিনি সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর