[email protected] শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
১০ শ্রাবণ ১৪৩২

চিকুনগুনিয়ার ঝুঁকিতে বিশ্বের ৫৬০ কোটি মানুষ!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১৮:০৭ পিএম

ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া ভাইরাস—এবং তা নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে ২০ বছর আগের মতো বৈশ্বিক প্রাদুর্ভাব আবারও ফিরে আসতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সংস্থাটি ভাইরাসটিকে ক্রমবর্ধমান গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত করে দেশগুলোকে দ্রুত নজরদারি, রোগ শনাক্তকরণ ও মশা নিয়ন্ত্রণ জোরদারের আহ্বান জানিয়েছে।

জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র মেডিকেল অফিসার ডায়ানা রোজাস আলভারেজ বলেন, এখন বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫.৬ বিলিয়ন মানুষ ১১৯টি দেশের এমন এলাকায় বসবাস করছেন যেখানে চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। তিনি সতর্ক করেন—২০০৪-০৫ সালের বৈশ্বিক মহামারির ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্ত করতে পারে। তখন বিশ্বের নানা ছোট দ্বীপে এক পর্যায়ে প্রায় ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন, পরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য মহাদেশে। তাই আগেভাগে প্রতিরোধই একমাত্র উপায়।

চলতি বছর শুরুর পর থেকেই ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপগুলোতে (লা রিইউনিয়ন, মায়োতি, মরিশাস) সংক্রমণ দ্রুত বেড়েছে, শুধু লা রিইউনিয়নেই জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে বলে আলভারেজ জানান।

ভাইরাসটি এখন মাদাগাস্কার, সোমালিয়া, কেনিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, ভারতে আক্রান্তের হারও ঊর্ধ্বমুখী। আরও উদ্বেগজনক হলো ইউরোপে প্রবেশ—ফ্রান্সে ১ মে থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮০০ রোগী শনাক্ত, যার মধ্যে দক্ষিণ ফ্রান্সে ১২টি স্থানীয় সংক্রমণ—অর্থাৎ রোগীরা বিদেশ ভ্রমণ ছাড়াই দেশে মশার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতালিতেও গত সপ্তাহে একটি স্থানীয় সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা ইউরোপীয় মূলভূখণ্ডে ঝুঁকির ঘণ্টা বাজাচ্ছে।

চিকুনগুনিয়ার কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক বা লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা এখনো নেই, উপসর্গ-ভিত্তিক সেবা (ব্যথা-জ্বর কমানো, পানি-পুষ্টি) প্রধান ভরসা। ভাইরাসটি ছড়ায় এডিস প্রজাতির মশা—বিশেষ করে ‘টাইগার মশা’ (Aedes albopictus) যেটি ডেঙ্গু ও জিকা ভাইরাসও বহন করে। দ্রুত বিস্তারক্ষম এই ভাইরাস বড় পরিসরে প্রাদুর্ভাব ঘটাতে পারে বলে ডব্লিউএইচও সতর্ক করেছে। ঝুঁকি কমাতে মশার প্রজননস্থল  নষ্ট করা, শরীর ঢেকে রাখা পোশাক পরা, মশারি/রেপেলেন্ট ব্যবহার এবং আক্রান্ত এলাকায় ভ্রমণকারী ও স্থানীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের সমন্বিত নজরদারি জরুরি।

সোর্স: ইনকিলাব

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর