এলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (পূর্বতন টুইটার) বিরুদ্ধে ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্টের (ডিএসএ) কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ঘটনার প্রায় এক বছর পর দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে তারা।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দফায় এক্সের বিরুদ্ধে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ জরিমানা এবং আরো কিছু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
ইইউর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই জরিমানার উদ্দেশ্য কেবল শাস্তি দেয়া নয়, বরং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। তাদেরকে মনে করিয়ে দেয়া যে—ইইউ তাদের প্রযুক্তি সংক্রান্ত আইন প্রয়োগে কঠোর ও অনমনীয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের বরাতে সংবাদমাধ্যম টেক টাইমস জানায়, ইউরোপীয় কমিশন চলতি বছরের মধ্যেই জরিমানা ও শাস্তি কার্যকর করতে পারে। জরিমানা কার্যকর হলে ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্টের অধীনে বড় কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির আওতায় আনার এটিই হবে প্রথম ঘটনা।
সংশ্লিষ্টদের উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম জানায়, বিষয়টি কেবল আর্থিক জরিমানায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। ইইউতে এক্সের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনাসহ কিছু ক্ষেত্রে সীমিত করারও নির্দেশ আসতে পারে।
তবে এক্সের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—বিষয়টি রাজনৈতিক। এক্সের গ্লোবাল গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স টিম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক সেন্সরশিপ হিসেবে দেখছে তারা।
কয়েক বছর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট পাস হওয়ার পর থেকেই তাদের নজরদারিতে পড়ে এক্স। বিশেষ করে ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ চলার সময় প্ল্যাটফর্মটিতে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ এবং সেগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে ইইউ কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে আসে আসে ইলোন মাস্কের প্রতিষ্ঠানটি।
অর্থের বিনিময়ে এক্সের ভেরিফায়েড ব্যাজ দেয়ার ব্যবস্থাকেও প্রতারণামূলক হিসেবে বিবেচনা করে ইইউ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্লাটফর্মটির কনটেন্ট মডারেশন, বিজ্ঞাপন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, গবেষকদের জন্য তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ এবং ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডও ইইউ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।
সবশেষ ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে মডেল প্রশিক্ষণে ব্যবহার করছিল এক্সের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি গ্রোক এআই। তদন্তে এটিকেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন হিসেবে দেখেছে ইইউ।
সোর্স: বণিক বার্তা
মন্তব্য করুন: