মহাকুম্ভে পুণ্যস্নানের জন্য গিয়েছেন? খুব সাবধান! কেউ গোপনে সেই স্নানের ভিডিও করে বিক্রি করতে পারে সোশ্যাল মিডিয়া ও টেলিগ্রামে! দুষ্কৃতকারীরা এমনই নোংরামির জাল বিছিয়েছে ভারতের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ মহাকুম্ভে। সাম্প্রতিক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ভয়ঙ্কর সত্য। মহাকুম্ভের পবিত্র মুহূর্ত লুকিয়ে ক্যামেরাবন্দি করা হচ্ছে এবং তা দেদার বিক্রি করা হচ্ছে টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে।
নারীরা গঙ্গায় স্নান করার সময়ে তাদের অজান্তেই কেউ কেউ গোপনে এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিচ্ছে। মূলত ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে এসব ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে, যেখানে ক্যাপশনে লেখা থাকে—‘মহাকুম্ভ গঙ্গাস্নান প্রয়াগরাজ’। অনেক পোস্টে #mahakumbh২০২৫, #gangasnan, #prayagrajkumbh-এর মতো জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে সেগুলো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
বিশ্বাস অনুযায়ী, এই সময় গঙ্গায় স্নান করলে পাপ মোচন হয় এবং মুক্তি লাভ করা যায়। এ বছর বিরল যোগের কারণে এই কুম্ভস্নান আরও বিশেষ। বলা হচ্ছে, প্রতি ১৪৪ বছরের ব্যবধানে আসে এই যোগ। তাই এ বছরের কুম্ভ ঘিরে উন্মাদনাও তুঙ্গে। ভারতের সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, কিছু টেলিগ্রাম চ্যানেল নারীদের এই ব্যক্তিগত মুহূর্তের গোপন ভিডিও বিক্রি করছে। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি চ্যানেলের নাম হল, ‘Ganga river open bathing group’, ‘Hidden bath videos group’ এবং ‘Open bath videos group’। এই চ্যানেলগুলোর সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেখানে মেয়েদের পোশাক বদলানোর সময়ের গোপন দৃশ্য, স্নানের সময় তোলা খোলামেলা ভিডিও এবং আরও নানারকম আপত্তিকর ফুটেজ শেয়ার করা হচ্ছে। এমন খবর প্রকাশ্যে আসতেই কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দু’টি সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
গত জানুয়ারি মাসে মহাকুম্ভে আসা নারী পুণ্যার্থীদের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের এক সাংবাদিক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ওই নারীদের ভিডিওতে অশ্লীল মন্তব্য করার পাশাপাশি মহাকুম্ভের পবিত্র স্নান ও হিন্দু দেব-দেবীদের নিয়ে নানা আপত্তিকর কথা বলেছেন। এই বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের নজরে আসতেই কড়া পদক্ষেপ করা হয়।
জানা যায়, ধৃতের নাম কামরান আলভী। তিনি নিজেই একটি সংবাদপত্র ও ওয়েবসাইট চালান। কুম্ভ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সঙ্গমে স্নানরত নারীদের ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন কামরান। শুধু তাই নয়, সেই ভিডিওতে নানা অশালীন মন্তব্য করেন।
সাধারণত মহাকুম্ভের মতো বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও নজরদারি ক্যামেরা মোতায়েন করে। তবুও, কীভাবে এই ধরনের ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে এবং কীভাবে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অনেকের দাবি, এই চক্রের মূল মাথাদের খুঁজে বের করা এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সূত্র: মানবজমিন
মন্তব্য করুন: