ajbarta24@gmail.com মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি ২০২৫
২৪ পৌষ ১৪৩১

যুক্তরাজ্যে ক্ষুধায় ধুকছে ৩০ লাখ শিশু: গবেষণা

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ২২:১০ পিএম

ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ যুক্তরাজ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বাড়ছে। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যে ৯৩ লাখ মানুষ ক্ষুধা ও দুরাবস্থার মধ্যদিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ৩০ লাখই শিশু। দারিদ্র্যের দিক দিয়ে এই সংখ্যাটা একটা রেকর্ড। অর্থাৎ এর আগে দেশটিতে একসাথে এত সংখ্যক মানুষ কখনও ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মুখোমুখি হননি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

বেসরকারি সংস্থা ট্রাসেল ট্রাস্ট গবেষণাটি চালিয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) এর গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চার বছরের কম বয়সি প্রায় এক-চতুর্থাংশ শিশু চরম দারিদ্র্য মোকাবিলা করছে।
ট্রাসেল ট্রাস্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিস্ময়করভাবে দুই দশক আগের তুলনায় বর্তমানে ৪৬ শতাংশ বেশি শিশু ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মুখে রয়েছে। প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজনই এই পরিস্থিতিতে আটকে গেছে।’
যুক্তরাজ্য বিশ্বের প্রথম সারির উন্নত দেশগুলোর একটি। এর অর্থনীতি বিশ্বে ষষ্ঠ বৃহত্তম। ধনী দেশগুলোর সংগঠন জি-৭ এর ও ন্যাটো সদস্য। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে করোনা মহামারির পর থেকে এর অর্থনীতি ক্রমেই দুর্বল হয়েছে।

এর ফলে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বেড়েছে। ইউনিসেফের গত বছরের এক প্রতিবেদন মতে, ধনী দেশগুলোর মধ্যে শিশু দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি যুক্তরাজ্যে। এছাড়া বর্তমানে ৬ কোটি ৯২ লাখ ৫১ হাজার জনসংখ্যার দেশটির ২৫ শতাংশ লোক দারিদ্র সীমার নীচে বাস করছে।

দারিদ্র্য যে হারে বাড়ছে তাতে ব্রিটিশ সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্রাসেল ট্রাস্ট বলেছে, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকার ‘জরুরি পদক্ষেপ’ না নিলে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের মুখোমুখি হওয়া মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এর আগে গত মাসেই দাতব্য সংস্থা বাটল ইউকের একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে অনেক দরিদ্র পরিবারকে ভীষণ সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করতে হচ্ছে। খাবার-পোশাক থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় উপকরণের সংকটে ভুগছে বহু পরিবার। এমনকি অনেকের ঘুমানোর জন্য বিছানা পর্যন্ত নেই।
১ হাজার ৫৬৭টি পরিবারের ওপর জরিপ চালায় বাটল ইউকে। জরিপে দেখা যায়, বেশিরভাগ পরিবারের অভিভাবকরা এক বেলার খাবার বাদ দিয়েছেন। অনেকে সন্তানদের জন্য নিজেদের বিছানা ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে খাবার, জ্বালানি ও পোশাকের মতো আবশ্যক পণ্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। অবনতি হয়েছে স্বাস্থ্য পরিস্থিতিরও।
শীতের দিনে বেশির ভাগ পরিবার ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা করতে পারছে না। তারা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক পরিবার–প্রধান বলেছেন, তারা অর্থাভাবে দুপুরের খাবার বাদ দিয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেক মানুষ বলেছেন, তাদের বাড়িতে সবার ঘুমানোর মতো পর্যাপ্ত বিছানা নেই।
অনেকে বলেছেন, সন্তানদের পর্যাপ্ত খাবার দিতে পারছেন না। অসুস্থ হয়ে পড়লেও অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন অনেকেই।
বাটল ইউকের প্রধান নির্বাহী জোসেফ হাওস বলেন, ‘এই জরিপের ফলাফল থেকে সহজেই বোঝা যায়, জীবনযাত্রার ব্যয়ে ব্রিটিশ নাগরিকেরা কী রকম পিষ্ট হচ্ছেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর