আজ বিশ্ব মা দিবস। পৃথিবীর সবচেয়ে মধুরতম ডাক ‘মা’। ছোট্ট এ শব্দের অতলে লুকানো থাকে গভীর স্নেহ, মমতা আর অকৃত্রিম দরদ। তাইতো বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার এই দিনটি পালিত হয় মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য।
ভ্রুণ থেকে দশটি মাস গর্ভে ধারণ করে যে মা সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখান, সেই মায়ের সম্মানে আলাদা করে একটু ভালোবাসা জানাতেই আজকের দিনটি। কিন্তু জানেন কি, এই দিবসের পেছনে রয়েছে একজন নারীর অবিচল প্রচেষ্টা ও ভালোবাসার অনন্য ইতিহাস?
প্রাচীন গ্রিসে বিশ্ব মা দিবস পালন করা হলেও আধুনিককালে এর প্রবর্তন করেন এক মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের নারী মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন।
ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃদিবস হিসেবে পালন করেন। ১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। এরপর ১৯১৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন ।
আনা জারভিসের মা অ্যান জারভিস ছিলেন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়। ১৮৬৮ সালে তিনি গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে "মাদার্স ফ্রেন্ডশিপ ডে" উদযাপনের আয়োজন করেছিলেন, যা ইউনিয়ন ও কনফেডারেট সেনাদের মধ্যে বন্ধনের প্রতীক ছিল।
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মা দিবস হয়ে ওঠে একটি বাণিজ্যিক উৎসব। ফুল, কার্ড ও উপহারের আদান-প্রদান ছিল যেটির মূল বৈশিষ্ট্য, তা পরিণত হয় বিপুল বাণিজ্যে। প্রতিবছর শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই বিক্রি হয় ১০ কোটিরও বেশি মা দিবসের কার্ড। আনুষ্ঠানিক ফুল হিসেবে এখনো সাদা কার্নেশন বহুল ব্যবহৃত হয়—যা আনার মায়ের প্রিয় ছিল।
মা দিবসের মূল বার্তা হলো মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, ত্যাগ ও স্নেহের প্রতি সম্মান জানানো। এই দিনে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটিকে মনে করি, যিনি আমাদের প্রথম শিক্ষক, অভিভাবক ও বন্ধু।
সোর্স: ইত্তেফাক
মন্তব্য করুন: