[email protected] বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
৩০ বৈশাখ ১৪৩২

পৃথিবীতে আছড়ে পড়ল মহাকাশযান ‘কসমস ৪৮২’!

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৫ ১৭:০৫ পিএম

ফাইল ছবি

৫৩ বছর আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা উৎক্ষেপিত ‘কসমস ৪৮২’ নামের একটি মহাকাশযান ১০মে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। একসময় ভেনাস অভিযানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপিত এই মহাকাশযানটি একের পর এক রকেট ত্রুটির কারণে কখনোই তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি।

পৃথিবীর কক্ষপথে আটকে থাকা এই মহাকাশযানটি অবশেষে এক ভয়াবহ অনিয়ন্ত্রিত পতন ঘটিয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছে। 

রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থা রসকসমস এবং ইউরোপীয় স্পেস সার্ভেইলেন্স অ্যান্ড ট্র্যাকিং এজেন্সি নিশ্চিত করেছে, মহাকাশযানটি ভারত মহাসাগরের উপর আছড়ে পড়েছে। তবে এর সুনির্দিষ্ট পতনস্থল নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি এখনও রয়েছে। মহাকাশযানটির অবস্থা এবং এর দীর্ঘ কক্ষপথের বিশ্লেষণ করার পর ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি জানায়, এটি জার্মানির রাডার স্টেশনেও ধরা পড়েনি।

মহাকাশযানটির বিশেষ অংশ-একটি শক্তিশালী টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি স্ফেরাকৃতি ল্যান্ডার-যার আয়তন প্রায় ১ মিটার এবং ওজন ৪৯৫ কেজি, তা পৃথিবীতে ফিরে আসার আগে বেশ কয়েকটি মহাকাশ বর্জ্যের মধ্যে সর্বশেষ অবস্থানে ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভেনাসের অতিমাত্রায় উত্তপ্ত পরিবেশে অবতরণে সক্ষম হওয়ার জন্য নির্মিত ছিল এবং সেজন্য মহাকাশের প্রতিকূলতার মধ্যে এর টিকে থাকার সম্ভাবনা ছিল বেশি।

বিজ্ঞানীদের মতে, এই মহাকাশযানটির ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর মাটিতে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল, তবে ঘটনাটি অবশেষে ঘটেছে।

অতীতে মহাকাশের এমন বর্জ্য প্রায়শই প্রশান্ত মহাসাগর বা অন্য অজানা সমুদ্রের উপর পড়েছিল। কিন্তু ‘কসমস ৪৮২’ এর ক্ষেত্রে পতনের সময় সঠিক অবস্থান নিয়ে ছিল বেশ কিছু অনিশ্চয়তা, যা আরও বেশি আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।

ডাচ মহাকাশ বিশ্লেষক মার্কো ল্যাংব্রুক টুইটারে এক বার্তায় মন্তব্য করেছেন, ‘যদি এটি ভারত মহাসাগরে পড়ে থাকে, তবে সম্ভবত কেবল তিমিরাই এটি দেখেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস কমান্ড এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশযানটির পতন নিশ্চিত করেনি, কারণ তারা অতিরিক্ত ডেটা বিশ্লেষণ করছে। তবে তাদের মতে, মহাকাশযানটি যেহেতু অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে প্রবেশ করছিল, তাই এর পতনের বিষয়ে পূর্বাভাস দেয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন।

জাতিসংঘের মহাকাশ চুক্তি অনুযায়ী, পৃথিবীতে যেকোনো মহাকাশ বর্জ্য বা ধ্বংসাবশেষ যদি পড়ে, তা সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানায় থাকবে। সেই অনুযায়ী, ‘কসমস ৪৮২’ এর ধ্বংসাবশেষের মালিকানাও রাশিয়ার কাছেই যাবে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে মহাকাশে যেসব অদৃশ্য যন্ত্র চলমান থাকে, তাদের একদিন অবশ্যই ফিরতে হবে, কিন্তু কখন বা কোথায়, তা কখনোই পূর্বানুমান করা যায় না। মহাকাশের রহস্য যেন দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে।

সোর্স: চ্যানেল ২৪

 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর