২০২৭ সাল থেকে টেস্ট ক্রিকেটকে দুই স্তরে ভাগ করতে চায় খেলাটির ‘তিন মোড়ল’ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। তাদের চাওয়া পূরণ হলে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৭ দল নিজেদের মধ্যে খেলবে, বাকি ৫ দল থাকবে দ্বিতীয় স্তরে।
দুই স্তরের কাঠামো নিয়ে এ মাসেই আইসিসির সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি)।
শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে এ খবর শোনার পর সাবেক ক্রিকেটাররা ক্ষুব্ধ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের পর এবার এ নিয়ে মুখ খুলেছেন আরেক ক্যারিবীয় কিংবদন্তি মাইকেল হোল্ডিং। ‘তিন মোড়লের’ দ্বিস্তর চালুর পেছনে তিনি আইসিসির দুর্বলতাকেই বড় কারণ মনে করছেন।
টেস্টে দ্বিস্তর কাঠামো নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ হোল্ডিংয়ের একটি কলাম প্রকাশ করেছে। যার শিরোনাম: টেস্ট খেলুড়ে ছোট দলগুলো শিগগিরই অদৃশ্য হয়ে যাবে—তবে আমার কাছে একটি সমাধান আছে। সেই কলামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার দাবি করেছেন, ফিফা বিশ্ব ফুটবলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও বিশ্ব ক্রিকেট আইসিসির নিয়ন্ত্রণে নেই।
৭০ বছর বয়সী হোল্ডিং তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘যখন ইংল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মধ্যে সফর করবে, তারা (বিপুল) অর্থ উপার্জন করবে। অথচ কোন দল কখন কোন দেশ সফর করবে, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ঠিক করার কথা। কিন্তু তাদেরকে (আইসিসি) এতটাই দুর্বল মনে হচ্ছে যে তা করতে পারছে না। তাদের কিছুটা শক্ত হতে হবে। তাদেরই একটি সঠিক সময়সূচি নির্ধারণ করতে হবে এবং বলতে হবে, “আমরা যেভাবে সূচি তৈরি করেছি, সেভাবেই সবকিছু হতে হবে।” কিন্তু মানুষ যেমনটা ভাবে, তারা তেমনটা করে না।’
হোল্ডিং আরও লিখেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত বা যে কেউ বলবে, “ওহ, আমি তো ওই দেশে যাচ্ছি না। এটা সময়ের অপচয়। আমি কেন যাব?” এটা সবার জন্য বাধ্যতামূলক করতে হবে। অনেক ভুলত্রুটির পরও ফিফা অন্তত ফুটবল চালায়। আইসিসিকেও অবশ্যই ক্রিকেট চালাতে হবে।’
১৯৭৯ বিশ্বকাপজয়ী এই কিংবদন্তি টেস্টের দ্বিস্তর কাঠামোর সরাসরি বিরোধিতা করেননি। তবে তাঁর চাওয়া, এমন কিছু চালু করা হলে যেন উত্তরণ–অবনমনের ব্যবস্থা থাকে, ‘যদি উত্তরণ–অবনমন না থাকে, তাহলে শীর্ষ স্তরের দলগুলোই শুধু অর্থ উপার্জন করতে থাকবে। নিচের স্তরের দলগুলো আরও গরিব হয়ে পড়বে এবং একসময় অদৃশ্য হয়ে যাবে। ওরা (তিন মোড়ল) হয়তো এটাই চায়। আমি একটি ধারণা পেয়েছি যে- দেশগুলোর প্রচুর অর্থ রয়েছে, তারাই খেলাটি চালিয়ে যেতে চায় এবং সম্ভবত এটিকে আরও খারাপ করতে চায়।’
সমাধান হিসেবে হোল্ডিং লিখেছেন, ‘যদি প্রথম স্তরের দেশগুলো দ্বিতীয় স্তরের দেশে খেলতে যায়, তাহলে তারা ভালো অর্থের বিনিময়ে টেলিভিশন-স্বত্ব বিক্রি করতে পারে। এতে তারা তাদের খেলোয়াড়দের একটু ভালো বেতন দেওয়ার সুযোগ পাবে। যদি তারা (তিন মোড়ল) পুরো ক্রিকেটাঙ্গনের ভালো চায়, তাহলে তাদের সেই পথেই হাঁটতে হবে।’
মন্তব্য করুন: