এক দিনই পরই বিপিএল। দলগুলো কেমন হলো, কোন দলের শক্তি বা দুর্বলতা কী সেসব জানার সময় তো এখনই। যদিও এখনো দলগুলোতে কারা কারা খেলবেন তা চূড়ান্ত হয়নি। বিশেষ করে বিদেশি খেলোয়াড়দের তালিকায় বড় পরিবর্তন আসতে পারে। তবে আপাতত যে তালিকা আছে তে ধরেই করা হয়েছেন এই হিসাব। আজ প্রথম পর্বে থাকছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী দলের শক্তি-দুর্বলতা।
বিপিএলে সাত দলের স্কোয়াড এখনো চুড়ান্ত হয়নি। বিশেষ করে বিদেশী খেলোয়াড় যারা তালিকায় আছেন, অনেকেই নাও আসতে পারেন শেষ পর্যন্ত। যাঁরা এসেছেন তাঁদের অনেকেও আবার সব ম্যাচ খেলবেন না। টুর্নামেন্ট চলাকালেই দলগুলোতে যোগ হতে পারেন অনেক বিদেশি খেলোয়াড়। তাতে শক্তির ভারসাম্য এদিক-ওদিক হয়ে যেতে পারে অনেকটাই। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের তালিকাতেও আসতে পারে কিছু বদল। এসব বিবেচনায় রেখেই করা হয়েছে এই বিশ্লেষণ।
ঢাকা ক্যাপিটালস
শক্তি: পেস বোলিং ইউনিট ঢাকার ভরসার জায়গা। মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে ঢাকার পেস আক্রমণ সামলাবেন মুকিদুল ইসলাম, মুশফিক হাসান ও আবু জায়েদ। দারুণ ছন্দে আছেন মুকিদুল। এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন মুকিদুল। মুশফিকও ঘরোয়া ক্রিকেটে পরীক্ষিত। এ ছাড়া আছেন পাকিস্তানের শাহনেওয়াজ দাহানি ও মির হামজাও।
দুর্বলতা: পেস বোলিং বিভাগ শক্তিশালী হলেও ঢাকার স্পিন বিভাগে বড় কোনো নাম নেই। স্পিন সহায়ক উইকেটগুলোতে মিডল ওভারের দায়িত্ব নেবেন কে? ব্যাটিং বিভাগে তানজিদ হাসান, লিটন দাসরা থাকলেও ব্যাটিং বিভাগও ততটা শক্তিশালী নয়। এনসিএলে ১৬০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা হাবিবুর রহমানের ওপর থাকবে বাড়তি দায়িত্ব। সাব্বির রহমান ও শাহাদত হোসেনকেও জ্বলে উঠতে হবে। বিদেশিদের মধ্যে অভিজ্ঞ থিসারা পেরেরা ও জনসন চার্লসে চোখ থাকবে।
সম্ভাব্য চমক: হাবিবুর রহমান
সম্প্রতি শেষ হওয়া এনসিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ ছক্কা এসেছে হাবিবুরের ব্যাট থেকে। টুর্নামেন্টে ১৫০ রান করেছেন এঁদের মধ্যে হাবিবুরের স্ট্রাইক রেটই সবচেয়ে বেশি—১৬০.৮৬। সোহান নামে পরিচিত এই ক্রিকেটার গতবার খেলেছেন খুলনার হয়ে। ১১ ম্যাচে রান করেছেন ১০৫। গড় ছিল ২০-এর নিচে, স্ট্রাইক রেট—১১১.৭০। গতবারের ব্যর্থতা ভুলিয়ে দেওয়ার সুযোগ এবার হাবিবুরের সামনে।
স্কোয়াড
অধিনায়ক: ঘোষণা করা হয়নি
দেশি: মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, তানজিদ হাসান, মুনিম শাহরিয়ার,সাব্বির রহমান, শাহাদাত হোসেন, মুকিদুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, আবু জায়েদ, রহমতউল্লাহ আলী, মেহেদী হাসান রানা, আসিফ হাসান ও হাবিবুর রহমান।
বিদেশি: থিসারা পেরেরা, জনসন চার্লস, চতুরাঙ্গা ডি সিলভা, স্টিভেন এসকিনেজি, শাহনেওয়াজ দাহানি, জহুর খান, রিয়াজ হাসান, আমির হামজা, ফরমানউল্লাহ সাফি, জেপি কোটজে, শুবহাম শুভাশিস রঞ্জন।
চিটাগং কিংস
শক্তি: দলটির শক্তির জায়গাই খুঁজে পাওয়া কঠিন। জাতীয় দলের ফিনিশার শামীম হোসেন, পেসার শরীফুল ইসলাম, স্পিনার আলিস আল ইসলাম ও পারভেজ হোসেনের পারফরম্যান্সেই দলটির সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করছে।
দুর্বলতা: চিটাগং ভুগছে অলরাউন্ডার সংকটে। সাকিব আল হাসান বিপিএলে খেলতে পারবেন না, সেটা অনেকটাই নিশ্চিত। এবার দুই অলরাউন্ডার মঈন আলী ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে পাওয়া নিয়ে শঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে।
সম্ভাব্য চমক: মারুফ মৃধা
মারুফ মৃধা বিপিএলে খেলবেন চিটাগং কিংসের হয়ে। আইসিসি অনূর্ধ্ব ১৯ দলের বাঁহাতি এই পেসার এনসিএলে ৪ ম্যাচে পেয়েছেন ৫ উইকেট। ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জেতা দলের হয়ে এই পেসার ৩ ম্যাচ খেলে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন।
স্কোয়াড
অধিনায়ক: ঘোষণা করা হয়নি।
দেশি: সাকিব আল হাসান, শরীফুল ইসলাম, শামীম হোসেন, পারভেজ হোসেন, খালেদ আহমেদ, আলিস আল ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, নাঈম ইসলাম, মারুফ মৃধা, রাহাতুল ফেরদৌস, শেখ পারভেজ, মার্শাল আইয়ুব।
বিদেশি: মঈন আলী, উসমান খান, হায়দার আলী, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, বিনুরা ফার্নান্দো, গ্রাহাম ক্লার্ক, টমাস ও’কনেল।
দুর্বার রাজশাহী
শক্তি: আকবর আলী-জিশান আলমদের ছন্দ এই দলটির জন্য শক্তি। সঙ্গে মোহাম্মদ হারিস ও রায়ান বার্লের মতো বিদেশি ক্রিকেটারও আছে রাজশাহীতে। যাঁরা বড় নাম না হলেও নিজেদের দিনে কাজটা করে দিতে পারেন। দলে আছেন তাসকিন আহমেদ-এনামুল হক বিজয়ের মতো নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটারও।
দুর্বলতা: বোলিং আক্রমণে তাসকিন ও হাসান মুরাদ ছাড়া পারফর্মার নেই। ব্যাটিং গভীরতাও আছে ঘাটতি।
সম্ভাব্য চমক: জিশান আলম
জাতীয় লিগ টি–টোয়েন্টিতে ৫২ বলে সেঞ্চুরি করেন জিশান আলম। এনসিএলে ২০ বছর বয়সী জিশান ছক্কা মারেন ২২টি। সেটাও মাত্র ৭ ম্যাচ খেলে। ৮ বলের মধ্যে ৭ ছক্কা, ৫২ বলে সেঞ্চুরি—জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির উদ্বোধনী ম্যাচেই ঝড় তুলেছিলেন।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই ব্যাটসম্যান এরপর আরও দুটি ফিফটি পেয়েছেন সিলেটের হয়ে। রান করেন ২৮১, তবে এর চেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল তাঁর ১৫৮.৭৫ স্ট্রাইক রেট।
স্কোয়াড
অধিনায়ক: ঘোষণা করা হয়নি
দেশি: তাসকিন আহমেদ, এনামুল হক (বিজয়), জিশান আলম,আকবর আলী, সানজামুল ইসলাম, ইয়াসির আলী, সাব্বির হোসেন, হাসান মুরাদ, শফিউল ইসলাম, মোহর শেখ, মেহরব হোসেন ও মিজানুর রহমান।
বিদেশি: মোহাম্মদ হারিস, আরাফাত মিনহাজ, রায়ান বার্ল, সাদ নাসিম, লাহিরু সামারাকুন, সালমান মীর্জা।
মন্তব্য করুন: