৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র, স্বৈরাচারের অন্যতম সহযোগী ও দোসর আমির হোসেন আমু নগদে লেনদেন করতেন। তিনি ব্যাংকে লেনদেন এড়িয়ে চলতেন। ফলে বিগত ১৬ বছরে ঝালকাঠিতে যত কমিশন-বাণিজ্য করেছেন, সব নগদ টাকায় করতেন। এসব লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতেন তার ভায়রা কিরণ।
সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য স্বৈরাচারের অন্যতম সহযোগী ও দোসর আমির হোসেন আমুর প্রভাব-প্রতিপত্তি বেশি ছিল ঝালকাঠিতে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরে একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছিল জেলায়, যারা আমুর হয়ে জেলায় ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ-বাণিজ্য, নির্বাচনী মনোনয়ন বিক্রি করত। সব টাকাই নগদে দিতে হতো আমুকে।
গত ৬ নভেম্বর বুধবার দুপুরে পশ্চিম ধানমন্ডি থেকে নগদে বিশ্বাসী আমুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঝালকাঠিতে আমুর বাসবভনে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে তার ওই বাসভবন থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ১৪ আগস্ট ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র ফাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী আমির হোসেন আমু নগদে লেনদেন করতেন। তিনি ব্যাংকে লেনদেন এড়িয়ে চলতেন। ফলে বিগত ১৬ বছরে ঝালকাঠিতে যত কমিশন-বাণিজ্য করেছেন, সব নগদ টাকায় করতেন। এসব লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতেন তার ভায়রা কিরণ।
ষাটের দশকের ছাত্রলীগ নেতা আমির হোসেন আমু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বরিশাল থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন বাকেরগঞ্জ-৭ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ (মালেক) থেকে। এরপর যত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিয়েছিল, সবকটিতেই দলের প্রার্থী ছিলেন তিনি।
২০০০ সালের উপনির্বাচনে ঝালকাঠি-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালে দায়িত্ব পান শিল্পমন্ত্রীর। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-২ (সদর-নলছিটি) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন আমু।
মন্তব্য করুন: