[email protected] শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
২৬ আষাঢ় ১৪৩২

মানুষ কি তার মৃত্যুর ৪০ দিন আগে থেকে বুঝতে পারে?

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০২৫ ১৭:০৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী মুমিনের জন্য পরীক্ষার হলের মতো। পরকালে সফল হতে অবশ্যই এই পরীক্ষায় সফলকাম হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। তবে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সফর শেষে প্রত্যেককে মৃত্যুর মধ্যদিয়ে চিরকালের আবাসস্থলে প্রবেশ করতে হবে। চিরসত্য মৃত্যুকে ঘিরে তাই জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।

এ ক্ষেত্রে মৃত্যুকে ‘আলিঙ্গনের’ পর প্রত্যেকের কাছে তার চিরস্থায়ী আবাসস্থল তুলে ধরা হয়। হাদিসে এসেছে, ইবনু উমার (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, মারা যাওয়ার পর মৃত ব্যক্তির সামনে তার মূল বাসস্থানকে তুলে ধরা হবে। সে যদি জান্নাতি হয়, তবে জান্নাতের বাসস্থান আর যদি সে জাহান্নামী হয়, তবে জাহান্নামের বাসস্থান। পরে বলা হবে, এই তোমার স্থান। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা তোমাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করবেন। (তিরমিজি, হাদিস: ১০৭২)

তবে মৃত্যু নিয়ে প্রায়ই একটি কথা শোনো যায় যে, যদি কেউ মারা যান তাহলে ৪০ দিন আগে থেকেই তিনি সেটি বুঝতে পারেন। কেউ কেউ বলেন, মৃত্যুর ৪০ দিন আগে একই স্বপ্ন মানুষ বারবার দেখে থাকে। তবে আসলেই কি কুরআন ও হাদিসে এমন কিছু আছে?

ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, মানুষ ৪০ দিন আগে নিজের মৃত্যুর কথা বুঝতে পারে, কুরআন ও হাদিসে এমন কোনো কথা আসেনি। বরং, পবিত্র কুরআনে নিশ্চিত করা হয়েছে, কে কখন কীভাবে মারা যাবে, সে বিষয়ে আল্লাহ তা’য়ালাই সর্বজ্ঞ।

মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মারা যাবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত।’ (সুরা লুকমান, আয়াত: ৩৪)

তবে হাদিসে বেশকিছু মৃত্যুর আলামতের কথা এসেছে, যেগুলো কারও মধ্যে পাওয়া গেলে তার মৃত্যুকে উত্তম মৃত্যু হিসেবে ধরা যেতে পারে। অর্থাৎ, এমন মৃত্যু একজন মুমিনের জন্য সৌভাগ্যের।

মৃত্যুর সময় ‘কালেমা’ পাঠ

মু’আয ইবনু জাবাল (রা.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যার সর্বশেষ বাক্য হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ৩১১৬)

জুমাবারে মৃত্যু

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন- জুমার দিনে অথবা জুমার রাতে কোনো মুসলিম ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করে, তাহলে কবরের ফিতনা থেকে আল্লাহ তাকে রক্ষা করেন। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ১০৭৪; মেশকাত, হাদিস: ১৩৬৭)

মারা যাওয়ার আগে বিশেষ কোনো ভালো কাজের তাওফিক পাওয়া

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আল্লাহ তা’য়ালা যদি তার কোনো বান্দার কল্যাণ করার ইচ্ছা করেন, তাহলে তাকে কাজ করার তাওফিক প্রদান করেন। এ সময় সাহাবীরা প্রশ্ন করেন হলো, হে আল্লাহর রাসুল! (সা.), তিনি কীভাবে তাকে কাজ করার তাওফিক দেন? জবাবে নবীজি (সা.) বলেন, তিনি সেই বান্দাকে মারা যাবার আগে সৎকাজের সুযোগ দান করেন। (সুনান আত তিরমিজি, হাদিস: ২১৪২)

শহিদি মৃত্যু

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ৫ প্রকার মৃত ব্যক্তি শহিদ- মহামারিতে মৃত ব্যক্তি, পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি, পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং যে আল্লাহর পথে শহিদ হলো, সেই ব্যক্তি। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৬৩৩-২৬৩৪)

এছাড়াও আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি ও গর্ভবতী নারীর মৃত্যুকে শহিদি মর্যাদা দেয়া হয়েছে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩১১১)

সোর্স: চ্যানেল২৪

 

 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর