[email protected] শনিবার, ১০ মে ২০২৫
২৭ বৈশাখ ১৪৩২

মিথ্যা প্রচারে ‘হাসির পাত্রে’ পরিণত ভারতীয় মিডিয়া

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২৫ ১৭:০৫ পিএম

ফাইল ছবি

যুদ্ধ উন্মাদনায় ভাসছে ভারতের গণমাধ্যম। পাক-ভারত সংঘাতের প্রকৃত তথ্য তো দূরে থাক ভুয়া তথ্য ছড়ানো, ভারতের ক্ষতির তথ্য অস্বীকার করা- এমনকি গাজা যুদ্ধের ছবিকে পাকিস্তানে হামলার ছবি হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো চালিয়ে যাচ্ছে অবিরাম এ মিথ্যাচার। টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে, আজতাক, এনডিটিভির মতো মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো এই দলের বাইরে নয়।

ইন্ডিয়া টুডের একটি খবরের শিরোনাম ছিল ‘ইন্ডিয়া হিটস করাচি ফার্স্ট টাইম সিন্স নাইনটি সেভেনটি ওয়ান’। আজতক টিভির এক খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির গ্রেপ্তার হয়েছেন। জি নিউজের এক খবরে বলা হয়, ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়েছে।

এসব সংবাদের অধিকাংশই যে ভুয়া তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এসব ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণে ভারতীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা তো হারিয়েছেই পাশাপাশি পরিণত হয়েছে হাসির পাত্রে।

ভুয়া খবর ছড়ানোর প্রতিযোগিতার মধ্যে যেসব মিডিয়া কিছুটা সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করছে সেগুলোর ওয়েবসাইট ব্লক করছে বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যে বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ারের সাইট ব্লক করেছে কর্তৃপক্ষ। সংবাদমাধ্যমটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারতের সংবিধানে, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘন করে দেশ জুড়ে ওয়ারের একসেস বন্ধ করা হয়েছে।

এর আগে ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর প্রকাশ করার পর সরকারের চাপের মুখে দ্য হিন্দু খবরটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় বলে লন্ডনের টেলিগ্রাফের এক খবরে বলা হয়েছে।

ভারতের মানুষ যাতে যুদ্ধের আসল খবর জানতে না পারে, সেজন্য পাকিস্তানভিত্তিক খবরের প্রায় সব উৎস বন্ধ করেছে দিল্লি। এমনকি রয়টার্স, বিবিসি, সিএনএন ও আলজাজিরার মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর এড়িয়ে যাচ্ছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের প্রখ্যাত সাংবাদিক হামিদ মীরের এক্স অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক করে দেওয়া হয়।

ভারতের মূলধারার গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভুয়া খবরের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে পছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে গাজার বিধ্বস্ত নৃশংসতার ছবি ও ভিডিও। তারা গাজার বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞের ছবিকে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতের মিসাইল হামলার ছবি বলে প্রচারণা চালাচ্ছে।

ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও চলছে মিথ্যা ও ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গের দুটি চ্যানেলÑ আজতক ও রিপাবলিক বাংলা।

অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির প্রোপাগান্ডা চ্যানেল রিপাবলিক টিভিতে পাকিস্তানভিত্তিক ভুয়া খবরের পাশাপাশি বাংলাদেশ নিয়ে চলছে নানা ধরনের মিথ্যা প্রচারণা।

যুদ্ধ উন্মাদনার কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দিকে কোনো নজর নেই ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর। ভুয়া খবর প্রচারে লিপ্ত এসব সংবাদমাধ্যমের ওপর নির্ভরতার কারণে পাক-ভারত সংঘাতের প্রকৃত চিত্র জানতে পারছে না ভারতের মানুষ।

সোর্স: আমার দেশ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর