পাকিস্তান সফরের পর থেকে টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে একই চিত্র, যেখানে হতাশা ছাড়া কিছু নেই। সর্বশেষ ১১ ইনিংসে বাংলাদেশ ৩০০ করেছে একটিতে, ৭ ইনিংসে পারেনি ২০০ ছুঁতে। গতকালও অলআউট মাত্র ১৬৪ তে। অপরদিকে নেপালকে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই যুব এশিয়া কাপের শেষ চারের টিকেট পেল বাংলাদশ । শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। দুই জয়ে সেমিতে উঠে যাওয়া লঙ্কানরা বিদায় নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তানের।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের চলমান ব্যাটিং ব্যর্থতা বর্ণনা করতে গিয়ে আপনার শব্দভাণ্ডার ফুরিয়ে যাবে, লিখতে লিখতে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন; কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতার পুরো চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারবেন না। ব্যর্থতা বা হতাশার পরিমাণ যতোটাই লেখা হবে, একটা পর্যায়ে মনে হবে; এটাও বুঝি কম হয়ে যাচ্ছে। তবে এতোটুকু লিখে হয়তো এটা বোঝানো সম্ভব যে, ব্যাটিংয়ে কতোটা খারাপ সময় যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের।
সেই ভারত সফর থেকেই ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে থাকা বাংলাদেশ কোনোভাবেই দিশা খুঁজে পাচ্ছে না। অবশ্য 'কোনোভাবেই' শব্দটা ব্যবহার করাও যুক্তিযুক্ত হবে কিনা, সেটা নিয়েও সংশয় থেকে যায়। কারণ, ব্যাটিং উন্নতিতে কৌশল পরিবর্তন বা চেষ্টাগত কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। একই মানসিকতা নিয়ে উইকেটে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা, আর ফিরে আসছেন অসহায় আত্মসমর্পণ করে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই হেরেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্টেও বলদায়নি ব্যাটিং ভাগ্য, এখানেও ব্যাটসম্যানদের সেই আসা-যাওয়ার দৃশ্য নিয়মিত হয়ে উঠেছে। জ্যামাইকা টেস্টে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমে গেছে ১৬৪ রানেই। পুরো ইনিংসে একটি হাফ সেঞ্চুরি, ৩০ ছাড়ানো রান করেছেন আরেকজন। ক্যারিবীয় পেসার জেডেন সিলস, শামার জোসেফ, কেমার রোচদের বোলিংয়ের সামনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দিশাহারা মনে হয়েছে।
ভেজা মাঠের কারণে এই টেস্ট মাঠে গড়ায় বেশ কয়েক ঘণ্টা পর। ৩০ ওভারে ২ উইকেটে ৬৯ রান তুলে প্রথম দিন পার করে বাংলাদেশ। সাদমান ইসলাম অনিক ৫০ ও শাহাদাত হোসেন দিপু ৩ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। আজ খেলা শুরু হতেই তছনছ বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ, ২৯ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ৪ উইকেট। ৬৯/২ থেকে স্কোর দাঁড়ায় ৯৮/৪। একে একে ফিরে যান শাহাদাত, লিটন কুমার দাস, জাকের আলী অনিক ও সাদমান।
৮৯ বলে ২টি চারে ২২ রান করেন থামেন শাহাদাত। ১ রান করে করেন লিটন ও জাকের। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা সাদমান ১৩৭ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় করেন ৬৪। এরপর কিছুটা প্রতিরোধ, তাইজুল ইসলামের সঙ্গে জুটি বেধে তোলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেটে এ দুজন যোগ করেন ৪১ রান। ব্যাটসম্যানরা যা করতে পারেননি, সেটা করে দেখান তাইজুল। মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ার পথে ৬৬টি বল খেলেন তিনি, রান করেন ১৬। আগুনে বোলিং করা ওইন্ডিজ বোলার সিলস ৪টি উইকেট নেন। ১৫.৫ ওভারে ১০টি মেডেন নেন তিনি, রান খরচা করেন মাত্র ৫ রান। ১৫ ওভারে ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেন শামার। রোচ ২টি ও আলজারি জোসেফ একটি উইকেট পান।
অঅনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিতে বাংলাদেশ
শঙ্কা নিয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লড়ে বাংলাদেশ। যদিও আফগানদের হারিয়েই মিশন শুরু করেছে আসরটির বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। পরের ম্যাচেও জারি থাকলো থাকলো বাংলাদেশের শাসন, এবার তাদের শিকার নেপাল। ব্যাটিংটা মনপুত না হলেও সহজ জয়ে আসরের সেমি-ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ।
রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে 'বি' গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই শেষ চারের টিকেট পেল আজিজুল হাকিম তামিমের দল। শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। দুই জয়ে লঙ্কানরাও উঠে গেছে সেমিতে। দুটি করে ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে আফগানিস্তান ও নেপালের।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে নেপাল। বাংলাদেশের আল ফাহাদ, ইকবাল হোসেন ইমন, রিজান হোসেনদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে সুবিধা করতে পারেনি তারা, ৪৫.৪ ওভারে ১৪১ রানে থামে নেপাল। জবাবে ওপেনার জাওয়াদ আবরার ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের হাফ সেঞ্চুরিতে ১২৮ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন: