[email protected] বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
১৬ বৈশাখ ১৪৩২

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, সরব ফেসবুকেও

বিডিআর-শাপলাচত্বর হত্যাকাণ্ড ও গুমসহ হাসিনার পাপাচারের শেষ নাই

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:০১ এএম

ছবি সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। হাসিনার আমলের পাপাচারের শেষ নাই। আয়নাঘর, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলাচত্বর, সাঈদীর ফাঁসির রায় পরবর্তী হত্যাকাণ্ডসহ অসংখ্য গুম, খুন। সেই সঙ্গে রাতের ভোটসহ অসংখ্য অপরাধ করেছেন হাসিনা। তার বাবার হত্যাকারীদের যেভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, তাকেও সেভাবে ফেরাতে হবে। রোববার (৫ জানুয়ারি) ব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে। হাসিনার আমলের পাপাচারের শেষ নাই। আয়নাঘর, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলাচত্বর, সাঈদীর ফাঁসির রায় পরবর্তী হত্যাকাণ্ডসহ অসংখ্য গুম, খুন। সেই সঙ্গে রাতের ভোটসহ অসংখ্য অপরাধ করেছেন হাসিনা। তার বাবার হত্যাকারীদের যেভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, তাকেও সেভাবে ফেরাতে হবে।

রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা হবে। তবে এখনো সুনির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করা হয়নি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা খসড়া চূড়ান্ত করব।

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে শফিকুল আলম বলেন, হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। না পারলে পরবর্তী সরকার চেষ্টা করবে। এটা জাতির আকাঙ্ক্ষা, জাতির দায়।

এ সময় তিনি বলেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য নভেম্বর মাসে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছিল। নতুন করে ২৫-৩০ জনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছি। অনেক কাজ করছে পিবিআই। আশা করছি পিবিআই ভালো কিছু করতে পারবে, ওনারা প্রচুর শ্রম দিচ্ছেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, পুরো পৃথিবীতে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম থাকে। নিউজ এজেন্সি থাকে, এটা ভাইটাল একটা কাজ। স্টেট ব্রডকাস্টের মেইন প্রোগ্রামিং টিভি থাকে, নিউজ টিভি থাকে, ইংলিশ চ্যানেলের টিভি থাকে। আপনি যদি তুরস্কের দিকে দেখেন, রাশিয়ার দিকে দেখেন, ইন্ডিয়ার দিকে দেখেন, পাকিস্তানের দিকে দেখেন, ইন্দোনেশিয়ার দিকে দেখেন, চায়নার দিকে দেখেন, এরা সবাই স্টেট ব্রডকাস্টকে বড় করছে। স্টেট ব্রডকাস্টের আলাদা একটা প্রয়োজনীয়তা আছে।

তিনি বলেন, ৩১ ডিসেম্বর বিটিভি নিউজ লঞ্চিং হয়েছে, যদিও পরীক্ষামূলকভাবে। আমাদের ইচ্ছা আছে এটাকে বড় করার। আমরা আশা করি বিটিভি এবং বাসস তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে ভালো ভালো প্রোগ্রাম এবং নিউজ প্রেজেন্ট করতে পারবে। তাদের ইক্যুপমেন্টের অভাব, সেই জায়গাও তারা বিষয়গুলো দেখবে। সবাইকে আমাদের স্বাধীনতা দেওয়া আছে। সবাই বাংলাদেশের রুলস অনুযায়ী প্রেস ফ্রিডম ব্যবহার করতে পারবেন।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের কড়া বার্তা
রবিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে হাসিনার পলায়নের স্মৃতিচারণা করে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেছেন প্রেসসচিব। পাঠকদের জন্য প্রেসসচিবের পোস্টটি তুলে ধরা হলো।

‘আজ থেকে ঠিক ৫ মাস আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। ওই দিন (৫ আগস্ট) তার দীর্ঘ ১৬ বছরের নৃশংস এবং দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরতন্ত্রের পতন ঘটে। আমাদের সাহসী ছাত্রদের নেতৃত্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করে চোরতন্ত্র ও গুমতন্ত্রের প্রধানকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছে।’

‘হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার করতে সংশোধনপূর্বক বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। গণহত্যায় জড়িত অনেক আ. লীগ নেতাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো শত শত নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে হাসিনাকে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
তবে আমরা এখনো ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো জবাব পাইনি।’
‘তবে জুলাইয়ে বিপ্লবে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যার বিচার ও জবাবদিহির মুখোমুখি করতে আমরা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় নিরলস থাকব। গণহত্যা এবং হাজার হাজার মানুষকে গুম, প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার পাচার, ব্যাংক ডাকাতি এবং হাজার হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা ও তার খুনি সহযোগীদের বিচার করা হবে।’

‘হাসিনা ও অন্য আ. লীগ নেতারা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা খুন ও দুর্নীতিতে জড়িত তাদের বিচার এ সরকারের মূল অগ্রাধিকার। খুনের অভিযোগে ছাত্রলীগকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

‘হাসিনা আড়ালে থেকে মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। তার সমর্থকরা এখনো বিভ্রমে ভুগছেন। আ. লীগের নেতাকর্মীরা এখনো গণহত্যাকে অস্বীকার করছেন। পাঁচ মাস কেটে গেলেও হাসিনা, শেখ পরিবার বা দলের সদস্যদের কোনো অনুশোচনা নেই। এর পরিবর্তে তারা মিথ্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে। তারা ভারতীয় মিডিয়ার কাছে মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে। তারা লাখ লাখ টাকা খরচ করছে গুজব ছড়াতে।’

‘হাসিনা ও তার দলের রক্তপিপাসু সদস্যদের হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আপস হবে না। কোনো লবিং হাসিনা ও তার খুনি সহযোগীদের উপকারে আসবে না। পৃথিবী এগিয়ে গেছে। আর হাসিনার পৃথিবী সংকুচিত হয়ে নয়াদিল্লির কয়েকটি ছোট কক্ষে সীমিত হয়েছে। আ. লীগের কর্মীরা যতই হাসিনার শাড়ির আঁচল আঁকড়ে ধরবে, দলের জন্য বিপদ ততই বড় করবে।’

‘রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসার কিছু আশা এখনো আছে তাদের। তবে তার আগে গণহত্যা, খুন, গুম ও লুটপাটের জন্য হাসিনার বিচার চাইতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা হাসিনা ও পরিবারকে ইতিহাসের ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলেছে। এখন আ. লীগের সাধারণ সমর্থকদের কর্তব্য হবে ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং রক্তপিপাসু স্বৈরশাসক থেকে নিজের সমর্থন সরিয়ে নেওয়া।’

‘হাসিনার পলায়নের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এই সময়ের মধ্যে এ সরকার দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এনেছে, দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করেছে। অর্থনৈতিক পতন এবং রাষ্ট্রের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর হয়েছে। বিশেষ করে গত পাঁচ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ব্যাপক হারে।’

 

 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর