[email protected] শনিবার, ১০ মে ২০২৫
২৭ বৈশাখ ১৪৩২

‘আ. লীগ নিষিদ্ধ করে ফ্যাসিবাদে শেষ পেরেক মারবো’: হাসনাত আব্দুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২৫ ১৮:০৫ পিএম

সংগৃহীত

যে শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনা গিয়েছিল, সেই শাহবাগ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে ফ্যাসিবাদের শেষ পেরেক মারবো বলে উল্লেখ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অন্যতম নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ।

শনিবার বিকেল সোয়া চারটায় শাহবাগে আ. লীগ নিষিদ্ধ করাসহ তিন দফা দাবিতে 'ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যর ব্যানারে গণজমায়েত কর্মসূচি তিনি এই কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, আপনারা যদি কখনো শুনেন কোনো ষড়যন্ত্রের চাপে পরে আমি আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি, তবে আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। জুলাইয়ের ঐক্যের শক্তিকে কেউ ভাঙ্গতে পারবেনা। আ. লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না।

তিনি আরো বলেন, এই শাহবাগে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনা গিয়েছিল। সেই শাহবাগ থেকে নিষিদ্ধ করে শেষ পেরেক মারবো। আ. লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে আমরা সবাই এক। লীগের সময়ে যারা গুম, খুন নির্যাতিত হয়েছে তাদের জন্য আমরা এখানে বসেছি। নমরুদ, ফেরাউনের যেমন পতন হয় ঠিক হাসিনারও সেভাবে পতন হয়।

এর আগে জমায়েতে বক্তব্য প্রদানকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ বলেন, আ. লীগ পরিচয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করা চলবে না। যতদিন পর্যন্ত আ. লীগকে পার্টি হিসেবে নিষিদ্ধ না করা হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালু থাকবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। দায়িত্ব গ্রহণের পরে এই সরকারের প্রথম কাজ ছিল গণহত্যাকারী এই রাজনৈতিক দলটিকে নিষিদ্ধ করা। নয় মাস পার হলেও নানা টালবাহানা করেও নিষিদ্ধ হয়নি। এই সরকার জনগণের রায় কেন বাস্তবায়ন হয়না- এমন প্রশ্ন তুলেন তিনি।

গণজমায়েতে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেন, ২০২৫ সালের মে মাসে আমাদের রাজপথে নামতে হতো না, যদি আমরা হাসিনা পতনের পরে চুপ্পু সাহেবের জায়গাটা নাড়িয়ে দিতাম। যদি ৫ আগস্টের পরে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারতাম তবে এমন দিন দেখতে হতো না। আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে কারণ ছাত্র উপদেষ্টাসহ দু-একজন উপদেষ্টা বাদে কেউই জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করেনা। উপদেষ্টা পরিষদের অনেককেই হয়তো শেখ হাসিনা টিকে গেলে তাদের জেলেও যেতে হতো না। শাপলা চত্বর, পিলখানা ও জুলাই গণহত্যার দায়ে আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এই বাংলায় আ. লীগের ঠাঁই হবে না- এটা তো জনগণ রায় দিয়েছে। যারা গণহত্যা চালিয়ে ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, ওপার বাংলায় বসে ষড়যন্ত্র করছে সেই আওয়ামী লীগের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নাই। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। যেসব বিদেশি শক্তি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে আনার চেষ্টা করবে, জুলাই জনতা তাদেরকে রুখে দেবে।

তিনি আরো বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছেড়ে যাবো না। আ. লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে শাহবাগে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তিকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে বিকেল তিনটায় গণজমায়েত শুরু হয়। এসময় আ. লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনকারীরা। 'ব্যান, ব্যান, আওয়ামী লীগ', 'লীগ ধর, জেলে ভর', 'জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে', 'দিল্লি না, ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা', 'ব্যান ব্যান, আওয়ামী লীগ,' 'অ্যাকশন টু একজন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেবো রক্ত,' 'রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়' প্রভৃতি স্লোগান দেন।

গণজমায়েতে এনসিপি উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সোর্স: আমার দেশ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর