আগামী ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আমল থেকে কেন জুলাই বিপ্লবের রূপ নিলো, কীভাবে নিলো, ৯ দফা থেকে ১ দফায় আমাদের কেন আসতে হলো, ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা কী ছিলো; এসব সামগ্রিক বিষয় নিয়েই বিপ্লবের ঘোষণা দেয়া হবে।
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ও সমর্থকরা ৩১ ডিসেম্বরের এই আয়োজন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। এদিন সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পরপর একই ধরনের দুটি পোস্ট দেওয়া হয়। প্রথম পোস্টে লেখা হয়, "৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, বিপ্লবীরা প্রস্তুত তো?" পরের পোস্টে ইংরেজিতে লেখা হয়, "প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন"।
কাছাকাছি সময়ে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে পরপর ইংরেজিতে দুটি পোস্ট দেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। প্রথমটিতে লেখা হয়, "কমরেডস, নাউ অর নেভার", দ্বিতীয়টিতে লেখা হয়, "প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন"।
এরপর জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীও ফেসবুকে ইংরেজিতে দুটি পোস্ট দেন। প্রথমটিতে তিনি লিখেন, "অল আইজ অন শহীদ মিনার, ৩১ ডিসেম্বর, সময়: বিকেল তিনটা", দ্বিতীয়টিতে বলা হয়, "প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন, নাউ অর নেভার"। সংগঠনটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ফেসবুকে লিখেছেন, "এ বছরেই হবে, ৩১ ডিসেম্বর, ইনশা আল্লাহ!" মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম লেখেন, ‘৩১ ডিসেম্বর! শহীদ মিনার, বিকেল তিনটা; এখনই সময়, বাংলাদেশের জন্য।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এ প্রসঙ্গে দুটি পোস্ট দিয়েছেন। প্রথমটিতে তিনি লেখেন, "কমরেডস, ৩১ ডিসেম্বর! নাউ অর নেভার।" দ্বিতীয় পোস্টে লেখা হয়, "প্রক্লেমেশন অব জুলাই রেভল্যুশন, ৩১ ডিসেম্বর, শহীদ মিনার, বিকেল তিনটা।" সংগঠনটির সদস্যসচিব আরিফ সোহেল লেখেন, "জুলাই হাজির হবে ইতিহাসে অমলিন হতে, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪।"
তবে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চাননি। অনানুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রে একটা পরিস্থিতির বর্ণনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় কীভাবে একটা যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, সেটা বলা হয়েছে। এটাই ঘোষণাপত্রের পদ্ধতি। একটা ঘোষণাপত্রে রাষ্ট্রকল্প বা এ ধরনের ধারণা থাকে। একটা ঘোষণাপত্রে স্বাভাবিক যে বিষয়গুলো থাকে, সেগুলোই জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে থাকবে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করে দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী নেতাদের উদ্যোগে ৮ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এখন এই দুই সংগঠনের উদ্যোগে তারুণ্যনির্ভর একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য করুন: