বিদেশি ফল স্ট্রবেরি। এখন চাষ হচ্ছে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে। সন্তানের মুখে এই ফল তুলে দিতে হনুফা নামে এক মা এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। পরীক্ষামূলক এই চাষাবাদে তিনি সফলও হয়েছেন। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের মানুষের কাছে বিক্রিও করেছেন তিনি।
বাড়ির আঙিনায় ছায়া যুক্ত স্থানে রঙিন আলো ছড়াচ্ছে বিদেশি ফল স্ট্রবেরি। একনজর এই ফল দেখতে ও স্বাদ নিতে ভিড় করছেন গ্রামের বহু মানুষ। বুড়িচংয়ের পশ্চিম সিংহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এই দৃশ্য।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পশ্চিম সিংহ গ্রামের প্রবাসী আবদুর রউফের স্ত্রী হনুফা আক্তার। তার বাড়ির পশ্চিম পাশে ছায়াযুক্ত ৭ শতক উঁচু জমি। সেই জমিতে পরীক্ষামূলক স্ট্রবেরি চাষ করেছেন তিনি। রঙিন ফল স্ট্রবেরিতে জমি বর্ণিল হয়ে আছে। গৃহিণী হনুফা আক্তার স্ট্রবেরি তুলে পাত্রে রাখছেন। প্রতিবেশী শিশুরা জমির পাশে ভিড় জমিয়েছেন। তাদের হাতেও ২/১ টি ফল তুলে দিচ্ছেন হনুফা। ক্রেতারা জমি থেকে কিনে নিচ্ছেন কেজি প্রতি ৬০০ টাকা ধরে।
হনুফা আক্তার বলেন, আমার সন্তান স্ট্রবেরি খেতে চেয়েছিল। বাজারে কিনতে গেলে দেখি এর দাম চড়া। তখনই ইচ্ছা জাগলো নিজেই স্ট্রবেরি চাষ করবো। আগ্রহের কথা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগমকে জানান তিনি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম কুমিল্লা হর্টিকালচার থেকে চারা সংগ্রহ করে দেন তাকে।
প্রথমে এই কাজে তার প্রবাসী স্বামী ও শ্বশুর গোলাম মোস্তফা সহযোগিতা করছেন। পরীক্ষামূলক ভাবে সাত শতক জমিতে চাষ করেন। ফলনও ভাল এসেছে। এলাকায় এই ফল প্রথম চাষ হওয়ায় আশপাশের আসছেন এক নজর দেখা জন্য। এরই মধ্যে পরিবার ও স্বজনদের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১৮-২০ কেজি ফল তিনি বিক্রি করেছেন। আগামীতে ৩০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করার আগ্রাহ প্রকাশ করেছেন এই নারী।
বুড়িচং উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিনা আক্তার বলেন, ‘হনুফা আক্তার একজন উদ্যমী কিষানি। নতুন ফসলের প্রতি তার আগ্রাহ বেশি। তিনি আমার কাছে স্ট্রবেরি চাষের আগ্রহ প্রকাশ করলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়। এটি ছিল পরীক্ষামূলক। আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করবেন বলে হনুফা আমাদের জানিয়েছেন।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ‘স্ট্রবেরি বিদেশি ফল। এটি এখন কুমিল্লায়ও চাষ হচ্ছে। আকর্ষণীয় বর্ণ, গন্ধ, স্বাদ ও উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন হওয়ায় সাবার কাছে সমাদৃত। এই ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হলেও এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। কেউ বাণিজ্যিকভাবে এটি আবদ করতে চাইলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
সোর্স: জাগোনিউজ২৪.কম
মন্তব্য করুন: