ajbarta24@gmail.com সোমবার, ৬ জানুয়ারি ২০২৫
২৩ পৌষ ১৪৩১

ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে কর্নেল) মোঃ নেয়ামুল ইসলাম ফাতেমী, বীর প্রতীক, আর্টিলারি

স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামে বীর সেনানিদের বীরত্বগাঁথা (পর্ব-২২)

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:০১ এএম

ছবি, ফেসবুক থেকে

ক্যাপ্টেন মোঃ নেয়ামুল ইসলাম ফাতেমী, বীর প্রতীক, আর্টিলারি ২১ ডিসেম্বর ১৯৮৪ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ১১ বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে কর্মরত থাকাকালীন ১৯ এপ্রিল ১৯৮৯ তারিখ আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, নকশাছড়ি গ্রামের একটি বাড়িতে চারজন সন্ত্রাসী (যার মধ্যে ২ জন সশস্ত্র) বেশ

ক্যাপ্টেন মোঃ নেয়ামুল ইসলাম ফাতেমী, বীর প্রতীক, আর্টিলারি ২১ ডিসেম্বর ১৯৮৪ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ১১ বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন।

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে কর্মরত থাকাকালীন ১৯ এপ্রিল ১৯৮৯ তারিখ আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, নকশাছড়ি গ্রামের একটি বাড়িতে চারজন সন্ত্রাসী (যার মধ্যে ২ জন সশস্ত্র) বেশ কিছুদিন যাবৎ একই নিয়মে যাতায়াত করে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন নেয়ামুল জোন অধিনায়কের অনুমতি সাপেক্ষে একটি অপারেশন পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী অপারেশন দলটি সোর্সের সহায়তায় উক্ত বাড়িটি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আনুমানিক ১৫০ গজ দূরত্বে অবস্থান নেয়। টহল অধিনায়ক জায়গাটি তড়িৎ পর্যবেক্ষণ করার পর পুরো দলটিকে তিনটি উপদলে ভাগ করেন এবং প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।

সেইসময় সন্ত্রাসীরা বাড়িটিতে অবস্থান করছিল ও রেডিও'তে বেশ জোরে গান শুনছিল। বাড়ির ভিতরে অবস্থানকৃত সন্ত্রাসীদের ২/৩ জন সেই সাথে সুরও মিলাচ্ছিলো। আর এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ক্যাপ্টেন নেয়ামুল পুরো দলকে বাড়িটির আরও নিকটবর্তী নিয়ে আসতে সক্ষম হন। তখন সময় আনুমানিক ২১০০ ঘটিকা। ঘর থেকে একজন সন্ত্রাসী বেরিয়ে এসে গাছের আঁড়ে অবস্থিত ডিউটি পোষ্টে কিছুক্ষণ অবস্থান করে এবং নিজের অস্ত্রের দিকে টর্চের আলো ফেলে। এ সময় ক্যাপ্টেন নেয়ামুল সেন্ট্রি পোস্টে দায়িত্বরত সন্ত্রাসীর হাতে অস্ত্র দেখতে পায়। কিছুক্ষণ পরেই আরও একজন সন্ত্রাসী বাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে চারপাশে টর্চের আলো দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে। এ সময় ডিউটি পোস্টে অবস্থানরত সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর অপারেশন দলের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি বর্ষণ শুরু করে।

ক্যাপ্টেন নেয়ামুল তৎক্ষণাৎ সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার লক্ষ্যে ব্রাশ ফায়ার করলে টহলদলের অন্যান্য সদস্যের অস্ত্রও গর্জে ওঠে। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ ফায়ার চলার পর সন্ত্রাসীদের দিক থেকে আর কোন ফায়ারের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। অতঃপর অপারেশন দল কর্তৃক তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং এ সময় ২ জন সন্ত্রাসীর মৃতদেহ, ১২১ রাউন্ড এ্যামুনিশন, ম্যাগাজিন ও একটি ৯ মিঃ মিঃ এস এম সি উদ্ধার হয়।

পরবর্তীতে ২১ মার্চ ১৯৯১ তারিখে তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি ক্যাপ্টেন মোঃ নেয়ামুল ইসলাম ফাতেমী'কে একজন দক্ষ ও চৌকস দল অধিনায়ক হিসেবে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করেন।

(চলবে)

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর