হাবিলদার মোঃ রজব আলী, বীর প্রতীক, ই বেংগল পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার রুমা জোনে ৩০ ই বেংগল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। রুমা জোনের অন্তর্গত ফারুয়া সাব জোনে তখন সি-কোম্পানীর ০৩ টি ক্যাম্প ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে দূর্গম এলাকায় ছিল মান্দাছড়া আর্মি ক্যাম্প। ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে সোর্সের মাধ্যমে জানা যায়, উক্ত মান্দাছড়া ক্যাম্পের অধীনে তিনবান ছড়া এলাকায় শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা মাঝে মাঝেই
হাবিলদার মোঃ রজব আলী, বীর প্রতীক, ই বেংগল পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার রুমা জোনে ৩০ ই বেংগল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। রুমা জোনের অন্তর্গত ফারুয়া সাব জোনে তখন সি-কোম্পানীর ০৩ টি ক্যাম্প ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে দূর্গম এলাকায় ছিল মান্দাছড়া আর্মি ক্যাম্প।
১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে সোর্সের মাধ্যমে জানা যায়, উক্ত মান্দাছড়া ক্যাম্পের অধীনে তিনবান ছড়া এলাকায় শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীরা মাঝে মাঝেই অবস্থান করে এবং এলাকাবাসীর কাছ থেকে অবৈধ চাঁদা উত্তোলন করে। এই সংবাদের ভিত্তিতে মেজর মোঃ কামরুল হাসান এর নেতৃত্বে শান্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি অপারেশন দল ফারুয়া আর্মি ক্যাম্প হতে মান্দাছড়া আর্মি ক্যাম্পে গমন করে। হাবিলদার মোঃ রজব আলী সেই টহলের উপ-অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। আনুমানিক রাত ২০০০ ঘটিকার সময় অপারেশন দলটি দুর্গম পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা ও ছড়া দিয়ে সারা রাত হেঁটে ভোর বেলায় তিনবান ছড়া এলাকায় পৌঁছায় এবং একটি পাহাড়ের উপরে অবস্থান নেয়। সেই পাহাড়ের নীচ দিয়ে একটি পাহাড়ী নদী বয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পরে নদীর অপর পাড়ে কিছু লোকজন দেখে হাবিলদার রজব আলীর সন্দেহ হয় এবং পাহাড়ের ঢাল ধরে তিনি নীচে নেমে আসেন। একটি গাছের পেছনে আঁড় নিয়ে হাবিলদার রজব আলী শান্তিবাহিনীর অস্ত্র, জনবল ও অবস্থান পর্যবেক্ষন করতে থাকেন।
শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি, জনবল ও অস্ত্রের বিবরণ হাবিলদার রজব তৎক্ষণাৎ মেজর কামরুলকে অবগত করেন। অপারেশন দলের অধিনায়কের নির্দেশে অন্যান্য সদস্যরা তখন পাহাড়ের নীচে নেমে এসে বড় বড় গাছের আড়ালে অবস্থান নেয়। এ সময় সেনাবাহিনীর টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে শান্তিবাহিনীর অবস্থান হতে অপারেশন দলের উপর ফায়ার করতে করতে সন্ত্রাসীরা পালাতে থাকে। শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের প্রচন্ড গুলির বিপরীতে অদম্য সাহসিকতায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে হাবিলদার রজব ও মেজর কামরুল শত্রুর সেন্ট্রি পোস্টের কাছে পৌঁছে যায় এবং হাবিলদার রজব অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে এসএমজিসহ একজন শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীকে ধরে ফেলেন। এসময় অন্যান্য সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে সামর্থ্য হয়। অতঃপর টহল দলের সবাই মিলে তল্লাশী চালিয়ে উক্ত স্থান থেকে শান্তিবাহিনীর ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
এই অপারেশনে হাবিলদার মোঃ রজব আলীকে অসীম সাহসিকতা এবং ক্ষিপ্রতার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করে।
(চলবে)
মন্তব্য করুন: