শহিদ লেফটেন্যান্ট জিএম মুশফিকুর রহমান, বীর উত্তম গত ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮৬ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ১৫ বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন এবং ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে যোগদান করেন। ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্তব্যরত থাকাকালীন তিনি খাগড়াছড়ি জেলার বাঘাইহাট জোনের অন্তর্
শহিদ লেফটেন্যান্ট জিএম মুশফিকুর রহমান, বীর উত্তম গত ২৫ ডিসেম্বর ১৯৮৬ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ১৫ বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন এবং ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে যোগদান করেন। ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামে কর্তব্যরত থাকাকালীন তিনি খাগড়াছড়ি জেলার বাঘাইহাট জোনের অন্তর্গত লক্ষীছড়ি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ক্যাম্প কমান্ডার থাকাকালীন ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ তারিখ ক্যাম্পের দায়িত্বাধীন কাসালং রিজার্ভ ফরেস্টের ঢেরাছড়া এলাকায় শান্তিবাহিনীর আস্তানার সন্ধান পেয়ে ০৩১০ ঘটিকায় বিশেষ অপারেশন পরিচালনার জন্য গমন করেন। উক্ত অপারেশনে তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ৩ জন শান্তিবাহিনীর সদস্যকে ঘায়েল করেন। সেইসাথে ২টি অস্ত্র, গোলাবারুদ, ইউনিফর্ম ও বিভিন্ন গোপনীয় দলিল পত্র উদ্ধার করেন। এই নির্ভীক, দায়িত্বশীল ও উচুঁ মনোবল সম্পন্ন অফিসার অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে অপারেশন পরিচালনা করে সম্পূর্ণ সফলতা অর্জন করেন।
তবে অপারেশনের এক পর্যায়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায়ও তিনি তাঁর অধিনস্থদের অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। যার ফলে তাঁর অধিনস্থ সেনাসদস্যগণও অফিসারের শরীরে গুলির আঘাতের ঝুঁকি আঁচ করতে পারেনি। সফল অপারেশন শেষে তাঁর রানার সৈনিক (ওসিইউ) মোস্তফা লক্ষ্য করে লেঃ মুশফিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এসময় রানার চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে জিজ্ঞাস করে, "স্যার গুলি লেগেছে বলেননি কেন?" লেঃ মুশফিক তখন হাসিমুখে বলেন "আমার গুলি লেগেছে তা দেখলে তোমরা ভয় পেতে, দেশের চেয়ে আমার জীবন বড় নয়"।
এক সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের ফলে এই অকুতোভয় নির্ভীক দেশপ্রেমিক অফিসার ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ তারিখ ০৮১৫ ঘটিকায় শাহাদৎ বরণ করেন। শরীরে বুলেট ধারণ করে নেতৃত্ব দেওয়ার যে অসাধারণ উদাহরণ লেঃ মুশফিক দিয়ে গেছেন তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
পরবর্তীতে ২৫ জানুয়ারি ১৯৯০ তারিখে তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই বীর যোদ্ধাকে মরনোত্তর বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনিই হলেন একমাত্র বীর উত্তম। তাঁর বীরত্ব গাঁথা স্মরনীয় করে রাখার জন্য পরবর্তীতে লক্ষীছড়ি ক্যাম্পের নামকরণ করা হয় শহিদ লেঃ জি এম মুশফিকুর রহমান আর্মি ক্যাম্প।
(চলবে)
মন্তব্য করুন: