চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৬৫ কোটি ৮০ লাখ (৬.৬৬ বিলিয়ন) ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.৭২ শতাংশ কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭৫৪ কোটি ২০ ল
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৬৫ কোটি ৮০ লাখ (৬.৬৬ বিলিয়ন) ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১.৭২ শতাংশ কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭৫৪ কোটি ২০ লাখ (৭.৫২ বিলিয়ন) ডলার।
এই বছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে ২ হাজার ৯৫ কোটি ৩০ লাখ (২০.৯৫ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই চার মাসে ২০ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল। অন্যদিকে জুলাই-অক্টোবর সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ১৪.২৯ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৮.৩ শতাংশ বেশি। গত বছরের এই চার মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ১৩.১৯ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছিল। এ হিসাবেই চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ কমে ৬.৬৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। ২২.৪৩ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হয়েছিল। তার আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৭.৩৮ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক হচ্ছে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য বা ব্যালেন্স অব পেমেন্ট। এই সূচকে ৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এই সূচকে ১৫ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বর শেষে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ঘাটতি দেখা দেয়। অক্টোবর অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে সেই ঘাটতি বেড়ে ৭৫ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এই সূচকে ৩১৬ কোটি (৩.১৬ বিলিয়ন) ডলারের ঘাটতি ছিল। এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে আর্থিক হিসাবে (ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট) উদ্বৃত্তের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। তবে ঘাটতি নিয়ে শুরু হয় ২০২৪-২৫ অর্থবছর। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তবে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এই সূচকে ৭৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দেয়। জুলাই-অক্টোবর সময়ে সেই উদ্বৃত্ত বেড়ে ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ১১৮ কোটি ৭০ লাখ (১.১৮ বিলিয়ন) ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
এদিকে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) ঘাটতি কমেছে। জুলাই-অক্টোবর সময়ে এই সূচকে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৩.৮৪ বিলিয়ন ডলার।
দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) চেয়ে ১০.৬৫ শতাংশ বেশি। সেই ইতিবাচক ধারা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ৮ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। ইতিমধ্যে নভেম্বর মাসের রেমিট্যান্সের তথ্যও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ২২০ কোটি (২.২০ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এই অঙ্ক গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এক হাজার ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ (১১.১৪ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬.৪৪ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এই পাঁচ মাসে ৮৮০ কোটি ৮৪ লাখ (৮.৮১ বিলিয়ন) প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে।
মন্তব্য করুন: