পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সমাজের সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে যাতে কোনো ভুল ধারণা সৃষ্টি না হয়, কারণ ভুল ধারণা সৃষ্টি করার মতো প্রচুর পরিবেশ আছে। কোন দেশের সেটা বলছি না বিশেষ করে মিডিয়ার একাংশ যতটুকু পারা যায় একটা খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সমাজের অংশ। সরকার এটা বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোনো মানুষ তার ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের কারণে নিগৃহীত হবে না, এটা আমরা অবশ্যই নিশ্চিত করব। মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যকে আমরা মমতা ব্যানার্জি ধরনের বক্তব্য হিসেবেই দেখতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে এটা তার জন্য খুব সঠিক পদক্ষেপ না রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। আমরা ভারতের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক, ভালো, সুসম্পর্ক চাই, পরস্পরের স্বার্থ ঠিক রেখে।
আজ সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার কূটনীতিকদের ব্রিফিং পর্ব শেষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দু সমাজের সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে যাতে কোনো ভুল ধারণা সৃষ্টি না হয়, কারণ ভুল ধারণা সৃষ্টি করার মতো প্রচুর পরিবেশ আছে। কোন দেশের সেটা বলছি না বিশেষ করে মিডিয়ার একাংশ যতটুকু পারা যায় একটা খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। কাজেই আমাদের মনে হয়েছে আমাদের এখানে যে ডিপ্লোমেটিক কমিউনিটি আছে, তাদেরকে বিষয়টাতে একটা ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন, যাতে তারা প্রকৃত অবস্থাটা বুঝতে পারে। এটা জানি যে তাদের নিজেদেরও ম্যাকানিজম আছে তথ্য সংগ্রহের। কিন্তু আমাদের অবস্থানটা পরিষ্কার করার জন্য আমি আজকে তাদের ডেকেছিলাম।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলেছি যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সমাজের অংশ। সরকার এটা বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোনো মানুষ তার ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের কারণে নিগৃহীত হবে না, এটা আমরা অবশ্যই নিশ্চিত করব। আমরা এটাও বলেছি, যে সরকার আছে তারা এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে, প্রায় চার মাস সময় যেটা পার হয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে। যদিও উপাদান ছিল অনেক বেশি গণ্ডগোল হওয়ার মতো। সেটাকে আমরা রাজনীতিবিদরাসহ সবার সহযোগিতায় নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। ছাত্ররা, রাজনীতিবিদরা সবাই মিলে আমরা একটা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পেরেছি।
মিডিয়ার একাংশ যতটুকু পারা যায় একটা খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে, এটা কারা করছে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি স্পষ্ট, প্রধানত ভারতের মিডিয়া। কিন্তু এর বাইরেও অনেক মিডিয়াতে, ভারতের মিডিয়ার যে বক্তব্য, ওটাকে ধরে অন্যান্য মিডিয়াতেও প্রকাশ হচ্ছে।
কেন শুধু ভারতের মিডিয়াকে দুষছেন? কেন দেশটির রাজনীতিবিদরাও বিবৃতি দিচ্ছেন, তাদেরকে আপনারা কোনো বার্তা দিতে চান কি না—এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে বার্তাটা দিতে চাই সেটা হলো যে এই সরকার কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক কার্যকলাপ বরদাশত করবে না। সেটা হিন্দু বলে কথা নয়, মুসলিম বলে কথা নয়, আমরা সবাইকে সমান চোখে দেখব। এ বার্তাটা আমরা সবাইকে দিতে চাই। সুনির্দিষ্ট কোনো অংশকে না, সবাইকে এই বার্তাটি দিতে চেয়েছি। এবং এটাও বলেছি যে আইন তার নিজের গতিতে চলবে, সেখানে কেউ যদি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে অবশ্যই সেটাকে শক্তভাবে মোকাবেলা করা হবে। এ বার্তাটি সবার কাছে গেছে।
মমতা ব্যানার্জির বক্তব্য সম্পর্কে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যকে আমরা মমতা ব্যানার্জি ধরনের বক্তব্য হিসেবেই দেখতে চাই। কারণ উনি এ বক্তব্য কেন দিলেন, সেটা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। তার সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত। তার বাসায়ও আমার যাতায়াত ছিল। কাজেই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে এটা তার জন্য খুব সঠিক পদক্ষেপ না রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। রাজনীতিবিদরা সব সময় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই বক্তব্য দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও স্বার্থ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা পরস্পরের স্বার্থ ঠিক রেখে ভারতের সঙ্গে একটা স্বাভাবিক, ভালো, সুসম্পর্ক চাই।
সূত্র: বণিকবার্তা
মন্তব্য করুন: