ajbarta24@gmail.com বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
১১ পৌষ ১৪৩১

সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

৪৯ ব্যাংক হিসাবে পৌনে ৪ হাজার কোটি লেনদেন হেনরী ও তার স্বামীর

ক্রাইম ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০১:১২ এএম

ছবি সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ-২ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী শামীম তালুকদারের ৪৯ ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে প্রায় ৭৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনেরও প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলায় সাবেক এ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে তার স্বামীর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকা। সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, দুই এমপিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সোমবার দুদকের সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান কর্মকর্তারা কমিশনের নির্ধারিত কার্যালয়ে আলাদাভাবে ছয়টি মামলা করেন।

হেনরী অবৈধভাবে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে ৩৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৭৭ টাকা ও ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার মার্কিন ডলারের (১১৫ টাকা হিসাবে প্রায় ১৫৮৫ কোটি টাকা) সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

সোনালী ব্যাংকের পরিচালক থাকার সময়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে হেনরী অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অপর এজাহারে বলা হয়, আসামি মো. শামীম তালুকদার (লাবু) তার স্ত্রী জান্নাত আরা হেনরীর অপরাধলব্ধ অর্থ দ্বারা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি তার ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৩০৬ কোটি ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২), ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ ছাড়া সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অস্বাভাবিক তথ্য পাওয়া গেছে। সাবেক এই মন্ত্রী ও নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত ১৫টি ব্যাংক হিসাবে ২১ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেন করেন। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

একই সঙ্গে সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়। এজাহারে বলা হয়, তাঁর নিজের নামে ২৩টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার লেনদেন করা হয়। তাঁর স্ত্রী ফাতেমা আক্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়।

বরগুনা-২ আসনের সাবেক এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর অপরাধলব্ধ অর্থ স্ত্রী রওনক রহমানের নামেও রেখেছেন।

এদিকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দুদকে নিজেদের সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী (এস কে সুর), তাঁর স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে আলাদাভাবে ‘নন-সাবমিশন’ মামলা করা হয়েছে। এসব অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর