নিউইয়র্কের মেয়র পদে মুসলমান প্রার্থীর ঐতিহাসিক জয়

নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সাক্ষী হলো যুক্তরাষ্ট্র। প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ নেতা—জোহরান মামদানি—নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

একদিকে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোর প্রত্যাবর্তনের প্রচেষ্টা, অন্যদিকে প্রগতিশীল তরুণদের নতুন নেতৃত্ব—এই দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে এই ফলাফল শুধু একটি নির্বাচন নয়, বরং এক নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা। ২৫ জুন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে বড় জয় পেলেন ৩৩ বছর বয়সি জোহরান মামদানি। এই নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অভিজ্ঞ রাজনীতিক ও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো। যৌন হয়রানির অভিযোগে চার বছর আগে পদত্যাগ করা কুওমো রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু মমদানির উত্থানে সেই পথ কার্যত রুদ্ধ হয়ে গেল।

যদিও এখনো ‘র‍্যাঙ্কড চয়েস’ ভোট গণনার চূড়ান্ত ফলাফল আসেনি, তবে নিউইয়র্ক নির্বাচনী বোর্ড জানিয়েছে—প্রথম পছন্দে পাওয়া বিশাল ভোটের ব্যবধানে জোহরান এগিয়ে আছেন। প্রায় দুই লাখ ভোটার কেবল একজন প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন, যার অর্থ মমদানির একক জনপ্রিয়তা ও সম্ভাব্য বিজয় নিশ্চিত।

মাত্র এক বছর আগেও যিনি মূলধারার রাজনীতিতে ছিলেন না, সেই জোহরান মামদানির নাম আজ নিউইয়র্ক শহরজুড়ে আলোচিত। ‘ফ্রি বাস’, ‘ফ্রি চাইল্ড কেয়ার’, ‘উচ্চতর ন্যূনতম মজুরি’, ‘সাশ্রয়ী আবাসন’—এমন প্রতিশ্রুতিতে তিনি তরুণ ভোটারদের মন জয় করেছেন। তার পোস্টার ছেঁয়ে গেছে শহরের দোকানপাট, বিলবোর্ড আর সোশ্যাল মিডিয়া। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “নেলসন ম্যান্ডেলার ভাষায়, এটি সবসময় অসম্ভব মনে হয়—যতক্ষণ না তা ঘটে। আমরা করে দেখিয়েছি।”

এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের দিকও স্পষ্ট হয়েছে। একদিকে প্রতিষ্ঠানপন্থী অভিজ্ঞ নেতৃত্ব, অন্যদিকে প্রগতিশীল তরুণ নেতৃত্বের নতুন ঢেউ। মামদানির এই বিজয় কেবল তার নিজের নয়, বরং এক প্রজন্মের জয়—যা সামাজিক ন্যায়বিচার, অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি এবং রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

সোর্স: ইনকিলাব